হালদা নদীতে মা মাছের ডিম ফুটানোর জন্য নির্মান করা রাউজানের দুটি হ্যচারী পরিত্যক্ত
শফিউল আলম, রাউজান প্রতিনিধিঃ হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার ভরা মৌসুম চলছে । প্রবল বর্ষন ও বজ্রপাত হলে যে কোন সময়ে মা মাছ নদীতে ডিম ছাড়বে । পাবর্ত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি পাহাড়ী এলাকা থেকে শুরু হালদা নদী রামগড়. চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান ও নগরীর মোহরা এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত কালুর ঘাট কর্ণফুলী নদীর সাথে মিলিত হয়েছে । প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী যুগ যুগ ধরে বৎসরের চৈত্র মাস থেকে শ্রাবন মাস পযৃণÍ সময়ে মা মাছ হালদা নদীতে ডিম ছাড়ে । এশিয়ার একমাত্র নদী হালদা নদী । নদীতে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ মাছ ডিম ছাড়ে। হালদা নদীর মা মাছ ডিম ছাড়ার পর হাটহাজারী- রাউজান উপজেলার হালদা নদীর তীরবর্তী এলাকায় বসবাস কারী ডিম সংগ্রহকারীর নদী থেকে ডিমসংগ্রহ করে। ডিম সংগ্রহকারীরা প্রবল বর্ষন ও বজ্রপাতকে উপেক্ষা করে নৌকা ও জাল নিয়ে নদী থেকে ডিম সংগহ করার পর ডিম সংগ্রহকারীরা নদীর তীরে খনন করা মাটির কুয়া ও হ্যচারীতে ডিম রেখে ডিম ফুটিয়ে রেনু উৎপাদন করে । ডিম ফুটিয়ে রেনু উৎপাদন করার পর দেশের বিভিন্ন এলাকা ও চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মৎস চাষী, মৎস হ্যচারীর মালিক, মৎস প্রকল্পের মালিকরা এসে রেনু ক্রয় করে নিয়ে যায় । হালদা মা মাছের ডিম থেকে উৎপাদিত রেনু ক্রয় করে নিয়ে মৎস চাষী, মৎস প্রকল্পে মাছ চাষ করে বিপুল পরিমান টাকায় আয় করেন । হালদা নদীর মা মাছের ডিম থেকে উৎপাদিত রেনু ও মাছের পোনা থেকে মাছ চাষ করে দেশের অর্থনীতেতে বিশাল অবদান রেখে আসছে । হালদা নদীতে মা মাছের প্রজনন রক্ষায় হালদা নদীতে বালু মহল ইজারা দেওয়া বন্দ্ব করে দেয় সরকার। মাছের প্রজনন রক্ষায় হালদা নদীতে মাছ শিকার নিষিদ্ব করা হয় । হালদা নদীতে যান্ত্রিক নৌযান চলাচল নিষিদ্ব করা হয় । প্রকৃতিক মৎস প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে হালদা নদীতে জাল ও বড়শী দিয়ে মাছ শিকার করছে কতিপয় ব্যক্তিরা । হালদা নদীতে জেগে উঠা চর কেটে মাটি নৌযানে করে ইটের ভাটায় ও বিভিন্ন এলাকায় পরিবহন করছে । হালদা নদীর বালু মহল ইজারা দেওয়া বন্দ্ব করা হলে ও হালদা নদীর বিভিন্ন স্থানে বালু উত্তোলন করছে সনাতন পদ্বত্বিতে । হালদা নদীতে যান্ত্রিক নৌযান চলাচল নিষিদ্ব করা হলে ও হালদা নদীর মোহনায় কালুর ঘাট থেকে লাম্বুর হাট , খেলার ঘাট পযর্ন্ত কর্ণফুলী নদীতে বড় বড় ড্রেজার দিয়ে প্রতিদিন বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। কর্ণফুলী নদীতে বড় বড় ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়তে প্রবেশ পথে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিনিয়িত । হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার পর ডিম থেকে রেনু ফুটানোর জন্য প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন ক্ষেত্র পুনঃদ্বার প্রকল্পের আওতায় রাউজানের পশ্চিম গহিরা, মোবারক খীল, কাগতিয়া, হটহাজারী উপজেলার মদুনাঘাট, মাছুয়া ঘোনা, শাহ মাদারী এলাকায় মৎস হ্যচারী নির্মান করা হয় । হ্যচারী নির্মানের পর রাউজানের মোবারক খীল হ্যচারী সহ হাটহাজারী উপজেলার তিনটি হ্যচারী সচল থাকলে ও রাউজানের কাগতিয়া, পশ্চিম গহিরা এলাকার দুটি হ্যচারী পরিত্যক্ত হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে । হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার ভরা মৌসুম শুরু হলেও দুটি হ্যচারী পুনঃনির্মান করা হয়নি। হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার পর রাউজানের দুটি হ্যচারী পরিত্যক্ত হওয়ায় নদীর তীরে খনন করা মাটির কুয়ায় ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম থেকে রেনু ফুটানোর কাজ করার জন্য রাউজানের পশ্চিম বিনাজুরী, দক্ষিন গহিরা, পশ্চিম গহিরা অংকুরী ঘোনা, গহিরা মঘাশাস্ত্রি বড়ুয়া পাড়া, কাগতিয়া, কাশেম নগর, গোলজার পাড়া, আজিমের ঘাট, মগদাই, পশ্চিম আবুর খীল,নাপিতের ঘাট, খলিফার ঘোনা, মইশকরম, উরকিরচর, সার্কদা, মোকামী পাড়া, কচুখাইন। হাটহাজারী উপজেলার গড়দুয়ারা, আমতোয়া, নতুন হাট, মার্দ্রাসা, দক্ষিন মার্দ্রাসা বাড়ীঘোনা, বোয়ালিয়া, রুহুল্ল্যাপুর , ছিপাতলী এলাকায় ডিম সংগ্রহকারীরা হালদা নদীর তীরে মাটির কুয়া খনন করে কুয়া তৈয়ারী করে রেখেছে । রাউজানের দক্ষিন গহিরা এলাকার বাসিন্দ্বা ডিম সংগ্রহকারী হাবিবুর রহমান বলেন, গত বৎসর একটি নৌকা দিয়ে হালদা নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করি। ডিম সংগ্রহ করার পর সংগৃহিত ডিম মোবারক খীল হ্যচারীতে ফুটিয়ে বিক্রয় করি। দক্ষিন গহিরার ডিম সংগ্রহকারী ইলিয়াছ বলেন, হলাদা নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার মৌসুম চলছে । প্রবল বর্ষন ও বজ্রপাত হলে যে কোন সময়ে আমবস্যা ও পুর্ণিমার তিথিতে মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে। নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করার জন্য নৌকা মোরমতের কাজ করছি । হালদা গবেষক ড.মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, হালদা নদী বাংলাদেশের মিঠাপানির মেজর কার্প জাতীয় মাছের অন্যতম ও গুরুত্বপুর্ণ প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন ক্ষেত্র। কিন্ত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৃষ্টিপাতের পরিমান কমে যাওয়ায় বিগত বৎসর হালদা থেকে সংগৃহিত ডিমের পরিমাণ ব্যৗাপক ভাবে কম ছিল। বর্তমানে হালদা নদীতে কার্পজাতীয় মাছের প্রজনন ম্যেসুম শুরু হয়েছে । স্থানীয় ডিম সংগ্রহকারীরা নৌকা, জাল, কুয়্ াহ্যচারী ও আনুষাঙ্গিক প্রস্তুতি শুরু করেছে । ইতিমধ্যে হালদা নদীর বিভিন্ন স্পনিং গ্রইন্ডে বড় বড় আকারের মা মাছের আনাগোনা দেখা যাচ্ছে । প্রজনন মৌসুমকে মা মাছের নিরাপদ করতে মা মাছ নিধন, ইঞ্জিল চালিত নৌযান চলাচল, হালদা নদীতে মাছ শিক্রা বন্দ্ব রাখতে হবে । হালদা নদীর পনি বিভিন্ন উৎস থেকে দুষন সৃষ্টি হয় ও ধংসাত্বক কর্মকান্ড বন্দ্বে প্রশাসনের পাশপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্থানীয়দের একসাথে কাজ করতে হবে । এ¦ি প্রজনন মৌসুমে ব্রজসহ পর্যাপ্ত পরিমান বৃষ্টিপাত ও পানির ভৌত রাসায়নিক প্যারমিটারগুলো যদি আর্ধম সীমার মধ্যে থাকে অথাৎ মা মাছের ডিম ছাড়ার অনুকুলে থাকে তা হলে এই বৎসর হালদা থেকে সংগৃহিত কার্পজাতীয় মাছের ডিমর পরিমান বাড়বে বালে আশা করছেন হালাদা গবেষক ড. মোঃ মফিকুল ইসলাম। হালদা নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে রাউজানের মোবারক খীল, হাটহাজারী মদুনাঘাট, শাহ মাদারী, মাছুয়া ঘোনা চারটি হ্যচারী ডিম ফুটানোর জন্য সচল করে রাখা হয়েছে বলে জানান, রাউজান উপজেলা সিনিয়র মৎস অফিসার পিযুষ প্রভাকর। রাউজান উপজেলা সিনিয়র মৎস অফিসার পিযুষ প্রভাকর আরো বলেন, হালদা নদীর মা মাছের প্রজনন মৌসুম শুরু হওয়ার পুবেই হালদা নদীর রাউজান অংশে ও হাটহাজারী অংশে গত মার্চ মাসে চারটি অভিযান চালিয়ে জাল উদ্বার করা হয় । হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে বালু বাহি নৌযান ধংস ও জরিমানা আদায় করা হয় ।
রাউজানে তাজকিয়ার ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত
আত্মশুদ্ধির চেতনায় উদ্দীপ্ত তারুন্য নির্ভর সংগঠন “তাজকিয়া” আয়োজনে রাউজান উরকিরচর ইউনিয়নে মুহাম্মদীয়া গাউসিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা এতিমখানা ও হেফজখানায় তাজকিয়া রাউজান উপজেলা শাখার ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ৭ এপ্রিল শুক্রবার আয়োজিত ইফতার মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহবায়ক গোলাম মোস্তফা নাহিয়ান। সদস্য জামশেদ উল্লাহ্’র সঞ্চালনায় শুরুতেই কোরআন তেলাওয়াত করেন হাফেজ মুহাম্মদ হাসান, নাতে রাসুল (সাঃ) পরিবেশন করেন মাওলানা মুহাম্মদ সজিব, মাইজভান্ডারী কালাম পরিবেশন করেন আহাদুল ইসলাম সাজিদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সদস্য মোরশেদ আলম। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাইজভান্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি বাংলাদেশ, কেন্দ্রীয় পর্ষদের সদস্য জনাব ইউসুফ আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মহিউদ্দিন।উপস্থিত ছিলেন তাজকিয়া রাউজান উপজেলা শাখার সদস্য শাহেদ হাসান মনি, আলী রেজা সাবের, সৈয়দ জোবায়ের হোসেন, তাসফিকুল মাইসাদ, সাইদুল আলম ইমন, তানভীর শাহ্, সাকিউল কাওসার, আমজাদ হোসেন, মাওলানা মুহাম্মদ ওমর ফারুক, মুহাম্মদ সিয়াম,মুহাম্মদ ইমন, মুহাম্মদ জিহান সহ-প্রমুখ।রাউজানে তাজকিয়ার ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত