২রা এপ্রিল বিশ্ব অটিজম দিবস এবং ৭ই এপ্রিল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবস ২টি পালিত হয়েছে। জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করাই এসব দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য।
স্বাস্থ্য হচ্ছে সম্পূর্ণ শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক সুস্থতা; শুধু কোনো রোগ বা অক্ষমতার অনুপস্থিতি নয়। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তির শরীরে কোনো রোগ বা অক্ষমতা না থাকলেই যে তিনি স্বাস্থ্যবান বা সুস্থ, তা ঠিক নয়। সুস্থ হতে হলে তাকে শারীরিক, মানসিক ও সামাজিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে হবে। এর সঙ্গে আধ্যাত্মিক দিকের কথাও বলা হয়। শারীরিক সুস্থতার জন্য প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর খাবার, ব্যায়াম, বিশ্রাম ইত্যাদি। মানসিক ও সামাজিক স্বাস্থ্যের জন্য চাই সুস্থ শরীর ও সুস্থ সমাজ।
অনেকেরই হয়তো সুস্থ শরীর আছে; তবে, আমরা কি একটি সুস্থ সমাজ বিনির্মাণ করতে পেরেছি? একদিকে যেমন জেনেটিক ভাবে নানা রকম জটিলতা তৈরি হচ্ছে অন্যদিকে আবার ভেজাল খাবারে সারা দেশ সয়লাব হয়ে গেছে। একদিকে সার এবং কীটনাশকের অপরিমিত ব্যবহার, অন্যদিকে কাপড়ের রং ও বিভিন্ন কেমিক্যাল খাবারের মধ্যে যত্র-তত্র ব্যবহার। এই যখন আমাদের অবস্থা তখন এর সঙ্গে বাড়তি পাওয়া সামাজিক কারণে মানসিক দুশ্চিন্তা, উদ্বিগ্নতা।
আমরা একদিকে বলছি স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন হতে অন্যদিকে আমরা সকলে মিলে অস্বাস্থ্যকর খাদ্য-খাবার ও পরিবেশ তৈরি করছি। এরই ফলশ্রুতিতে আমাদের জীবনী শক্তি দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে। কমে যাচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। জন্ম নিচ্ছে অসুস্থ ও অটিজম শিশু আবার আমরা বিবৃতি দিচ্ছি অটিজমের কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। কারণ কীভাবে খুঁজে পাবো? কারণ তো আমি, আপনি সকলেই। ফলে দিনের পর দিন অটিজম শিশুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে আবার আমরা অটিজম শিশুর নিউরো- ডেভেলপমেন্টাল চিকিৎসার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করছি। তাহলে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে আমরা যা বলছি তার বিপরীত কাজটাই করছি।
সমাজে অটিজম শিশুর সংখ্যা কমাতে চাইলে যে সব দম্পতির পরিবারে জটিল জেনেটিক রোগ-ব্যাধি বিশেষ করে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস এবং যক্ষ্মা আছে সে সব দম্পতির সন্তান গ্রহণের পূর্বেই জেনেটিক চিকিৎসা নেয়া জরুরি। এ ছাড়া যাদের সন্তান অটিজমে আক্রান্ত তাদের জন্য প্রয়োজন নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল চিকিৎসা। অটিজম শিশুরা আমাদেরই সন্তান। তাদেরকে সমাজের মূলধারায় ফিরিয়ে আনা আমাদেরই দায়িত্ব।
অতএব, আসুন আমরা সকলে মিলে একটি স্বাস্থ্যকর সমাজ বিনির্মাণ করি এবং একই সঙ্গে অটিজম সন্তানদের নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল চিকিৎসার মাধ্যমে সমাজের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করি।
লেখক: পিএইচ.ডি (স্বাস্থ্য), এম. ফিল (স্বাস্থ্য), ডিএইচএমএস। গবেষক ও চিকিৎসক (ক্রনিক ডিজিজ অ্যান্ড নিউরোসাইকিয়াট্রিক ডিজঅর্ডার)।
চেম্বার: ড. হক হোমিও ট্রিটমেন্ট অ্যান্ড রিসার্স সেন্টার, বিটিআই সেন্ট্রা গ্রান্ড, গ্রাউন্ড ফ্লোর (জি-৪), ১৪৪ গ্রীন রোড, পান্থপথ, ঢাকা। মোবাইল: ০১৭১২-৪৫০ ৩১০;