চোখ পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের একটি। এটি শরীরের অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। শিশু জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই তার শারীরিক সুস্থতা খেয়াল করা প্রয়োজন। চোখের নানা ধরনের জন্মগত ত্রুটি হতে পারে। এমনকি শিশুর, চক্ষুগোলক নাই এমন অবস্থারও জন্ম হতে পারে। আর সহজে তা দেখে বোঝা নাও যেতে পারে। তাই জন্মের পরপরই নবজাতককে শিশু বিশেষজ্ঞ দ্বারা পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। তবে চোখের অতি সাধারণ একটি সমস্যা হলো চোখ দিয়ে পানি পড়া। এটি এক বা দুটো চোখেই হতে পারে। এখানে চোখে কোনো লালভাব হবে না, চোখ ফুলে থাকবে না আবার কোনো ময়লাও জমবে না।
শুধু অল্প করে পরিষ্কার পানি বের হবে কান্না করা ছাড়াই। ডাক্তারি ভাষায় এক বলে ‘নষড়পশবফ ঃবধৎ ফঁপঃ’. শিশুর এমন হলে চোখ মুছে পরিষ্কার করতে হবে। চোখের গোড়া থেকে শুরু করে নাকের পাতা পর্যন্ত হালকা চেপে দিতে হবে প্রতিদিন ৬-৭ বার করে ১-২ মিনিট ধরে।
সাধারণত ১ বছর বয়সের মধ্যেই এটি ভালো হয়ে যায়। তবে কোনো কারণে ভালো না হলে বা বেড়ে গেলে দ্রুত শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে নিচের কোনো সমস্যা দেখা দিলে জরুরিভাবে ডাক্তার দেখাতে হবে।
* চোখ লাল হলে,
* ব্যথা হলে,
* ফুলে গেলে,
* আলোতে চোখ বন্ধ হয়ে গেলে,
* চুলকালে,
* চোখের আকুতি অস্বাভাবিক হলে।
অনেক সময় শিশুর চোখ দেখতে বাঁকা হয়। যাকে আমরা ট্যারা চোখ বলি। এটি জন্মগতভাবে হতে পারে। তবে বাবা-মাকে সচেতন হতে হবে এবং সঠিক সময়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে। যদি জন্মের সঙ্গে সঙ্গে বোঝা না যায়, সেক্ষেত্রে ছোট শিশু খুব কাছ থেকে টিভি দেখে কিনা বা বা চলতে ফিরতে ধাক্কা খায় কিনা, বা মা-বাবার মুখের কাছে এসে কথা বলে কিনা, ইত্যাদির দিকে নজর দিতে হবে। প্রয়োজনে ডাক্তার দেখাতে হবে। ট্যারা চোখ যদি দৃষ্টিশক্তির সমস্যার কারণে হয়, তাহলে যত দ্রুত চিকিৎসা করা যাবে, নিরাময়ের সম্ভাবনা তত বেশি। এর চিকিৎসা ব্যয়ও তেমন বেশি না।
এসব ছাড়াও চোখের জন্মগত ত্রুটি শরীরের অন্য কোনো সমস্যার কারণেও হতে পারে। শিশু গর্ভে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন ভাইরাল ইনফেকশন হলে বা চোখের কোনো রোগ থেকেও দৃষ্টিশক্তি কম বেশি হতে পারে।
লেখক: কনসালটেন্ট, শিশু বিভাগ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
চেম্বার: (১) ডা. নাফিসা’স চাইল্ড কেয়ার শাহ মখদুম, রাজশাহী। (২) আমানা হাসপাতাল, ঝাউতলী মোড়, লক্ষ্মীপুর, রাজশাহী। মোবাইল-০১৯৮৪১৪৯০৪৯