জাটকা সংরক্ষণে দেশের ৬টি অভয়াশ্রমের মধ্যে চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা অন্যতম। আর এই জাটকা সংরক্ষণেই সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ রয়েছে। তবে দুই মাসের সেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আগামীকাল রোববার (৩০ এপ্রিল) মধ্যরাতে। তাই নদীতে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জেলেরা। তার আগে মাছ ধরার উপকরণ জাল ও নৌকা মেরামতে ব্যস্ত তারা।
জেলে করিম, আদিব, রবিউল ও ফারুক জানান, সাময়িকভাবে পেশা হারিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কিছুটা কষ্ট হলেও এখন তাদের প্রত্যাশা নদীতে মিলবে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। আর তা যদি না হয়, তাহলে তাদের পিছু ছাড়বে না দুর্ভোগ। কারণ, এরই মধ্যে ধারদেনা করে নতুনভাবে জাল ও নৌকা গড়েছেন তারা। তাছাড়া মহাজন এবং এনজিও ও সমিতি থেকে ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ তো করতেই হবে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরায় এরই মধ্যে আটক হয়েছেন ১ হাজার জেলে, জব্দ করা হয় ২০ কোটি মিটার জাল ও ১৯ টন জাটকা। জাটকা সংরক্ষণে এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে ছিল বলে দাবি নৌপুলিশের।
এই বাহিনীর চাঁদপুর অঞ্চল প্রধান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, অন্যবারের চেয়েও এবারে অভয়াশ্রমে দায়িত্বরত অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে নৌপুলিশ বেশ তৎপর ছিল। যে কারণে যখনই জেলে জাল ও নৌকা নিয়ে নদীতে নেমেছে। তখনই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আর সবার সার্বিক প্রচেষ্টায় অভয়াশ্রমে জাটকা সংরক্ষণ হওয়ায় এ বছর ইলিশের উৎপাদন বাড়বে বলে আশা বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও মৎস্যবিজ্ঞানী এবং ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর রহমানের।
ড. আনিছুর রহমান জানান, বিগত বছর দেশে ইলিশের উৎপাদন ছিল ৫ লাখ ৬৫ হাজার টন। তবে এবার সময় মতো জাটকা সংরক্ষণের ফলে ইলিশের উৎপাদন ৬ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে। জেলায় পদ্মা ও মেঘনায় ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় অর্ধলক্ষাধিক জেলে।