বৃষ্টিহীন নগরীতে বইছে দাবদাহ এরমধ্যেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং ভোগান্তি বাড়িয়ে দিয়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের মানুষের। গত শুক্র ও শনিবার লোডশেডিং কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে থাকলেও গতকাল রবিবার তা তীব্র আকার ধারণ করে। বিকালে মুরাদপুর বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের পর বিদ্যুৎ সরবরাহে মারাত্মক সংকট সৃষ্টি হয়। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে অনেক এলাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিকাল সোয়া ৩টার পর মুরাদপুর সাবস্টেশনের ব্রেকার ইনসুলেশন ব্রেক থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তা দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হলেও অগ্নিকাণ্ডের পর সাবস্টেশন থেকে পাওয়ার সাপ্লাই বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে নগরীর পাঁচলাইশ, মুরাদপুর, কালুরঘাট, খুলশী, ষোলশহর, স্টেডিয়ামের আশপাশের এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। তবে রাত ৮টার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তীব্র গরমের কারণে রবিবার চট্টগ্রামে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যায়। দিনে লোডশেডিং এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৩০০ মেগাওয়াট। বেলা সোয়া ৩টার দিকে আস্বাভাবিক লোড এবং হিটের কারণে মুরাদপুর সাবস্টেশনের ব্রেকার ইনসুলেশন ব্রেকে আগুন ধরে যায়। জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদামতো বিদ্যুৎ না পাওয়া এবং সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ডের কারণে রবিবার লোডশেডিং হয়েছে বেশি।
পিডিবির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অশোক কুমার চৌধুরী জানান, অতিরিক্ত লোড এবং অস্বাভাবিক গরমের কারণে মুরাদপুর ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশনের একটি ব্রেকারে আগুন ধরে যায়। দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও এই সাবস্টেশন থেকে যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় সেখানে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয়। তবে রাত ৮টার পর পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
তিনি বলেন, তীব্র গরমের কারণে রবিবার দিনেই বিদ্যুতের চাহিদা ১২শ মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যায়। যদিও এর বিপরীতে জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ পাওয়া গেছে ৮৫০-৯০০ মেগাওয়াট। অতিরিক্ত চাহিদা এবং সাবস্টেশনে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিদ্যুৎ নিয়ে নগরবাসীকে কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বিদ্যুৎ কর্মীরা কাজ করছেন। আশা করি দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে। মানুষ স্বস্তি পাবেন।
এদিকে ঘণ্টায় ঘণ্টায় লোডশেডিংয়ের কারণে গতকাল নগরীতে ব্যবসা-বাণিজ্য ও মানুষের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড প্রায় স্থবির হয়ে পড়ে। লেখাপড়া করতে না পেরে বিপাকে পড়ে আসন্ন এইচএসসি ও সমমানসহ অন্যান্য পরীক্ষার পরীক্ষার্থীরাও। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন হাসপাতালে ভর্তি রোগী, ঘরে থাকা বয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুরা। অনেকে চার্জার ফ্যান কিনতে ছুটে যান ইলেক্ট্রনিক পণ্যের দোকানে।