আহাম্মদ কবীর রচিত ও মোস্তফা কামাল যাত্রা নির্দেশিত “পণ্ডিত বিহার বিশ্ববিদ্যালয়” নাটকটি আগামীকাল ২৫ জুলাই’২৩ বিকেল ৫ টা এবং সন্ধ্যা ৭ টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি চট্টগ্রাম এর মূল মিলনায়তনে মঞ্চস্থ হবে।
বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যা এর রচয়িতাগণের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত অত্যতম প্রধান শিক্ষাকেন্দ্র “পণ্ডিত বিহার” এর প্রতিষ্ঠা, পরিচালনা ও ধ্বংস হওয়ার ইতিবৃত্ত চিত্রায়ণের পাশাপাশি নাটকটিতে চট্টগ্রামে আরও একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া সেই ঐতিহ্যকে তুলে ধরার প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব কাহিনি-সংলাপ-নৃত্য-গীতির মাধ্যমে অভিনীত হয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত ‘আন্তর্জাতিক পণ্ডিত বিহার বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১২’ রহস্যজনক কারণে ২০২৩ সালে এসেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় স্থানীয় জনগণের অভিমতকে উপজিব্য করে রচিত ‘পণ্ডিত বিহার বিশ্ববিদ্যালয়’ নাটকটি মঞ্চায়ণের মাধ্যমে চট্টগ্রামে আরো একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করার যৌক্তিকতা তুলে ধরতেই নাট্যাধার ‘পণ্ডিত বিহার বিশ্ববিদ্যালয়’ নাটকটি প্রযোজনা করেছে।
এছাড়াও ঐতিহ্যগত দিক থেকেও আলোচ্য বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন প্রধান প্রধান চর্যাপদ বা চর্যাগীতগুলো এই বিদ্যাপীঠের সাথে সংশ্লিষ্ট সিদ্ধাচার্যগণই রচনা করেছিলেন। যার বিষয়বস্তু ও জীবনাচরণ এর উপজিব্য হচ্ছে- দেয়াং অঞ্চলের সমকালীন জীবনযাত্রা, সমাজ ও সংস্কৃতি। তাই অনতিবিলম্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক আনোয়ারায় ইতোমধ্যে বরাদ্দ দেওয়া এবং অধিগ্রহণকৃত ৫০ একর জমিতেই আন্তর্জাতিক পণ্ডিত বিহার বিশ্ববিদ্যালয়’টি প্রতিষ্ঠা করা সময়ের দাবি।
স্মরণীয় যে, ২০১১ সালে চট্টগ্রামে নতুন একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য অধ্যাপক ড. জিনবোধী ভিক্ষু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছিলেন। যা পরবর্তীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদন পায় এবং তার জন্য ২০১২ সালে চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রসাশকের তত্ত্বাবধানে ৫০ একর জমি নির্ধারণের জন্য দাপ্তরিক কাজও সম্পন্ন হয়েছিল। কিন্তু ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে আরো ৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও চট্টগ্রামের আনোয়ারায় আজও প্রস্তাবিত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার কাজটি সম্পন্ন হয়নি।
কেন, কী কারণে আইন হিসাবে অনুমোদন পাওয়ার পরও ‘আন্তর্জাতিক পণ্ডিত বিহার বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা হচ্ছে না- তা আলোকপাতের পাশাপাশি নাটকটির মঞ্চায়ণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার স্বপক্ষে জনমত গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চালিয়েছে ‘নাট্যাধার’।
নাটকটির সংগীত পরিচালক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষক মিশকাতুল মমতাজ মুমু, রূপসজ্জা পরিকল্পনা শাহরিয়ার হান্নান(তির্যক নাট্য গোষ্ঠী), পোষাক পরিকল্পক হারুন অর রশীদ, আলোক পরিকল্পক মো. মুরাদ হাসান(নান্দীমুখ), নৃত্য পরিচালক মান্না জাকির নাজাকাত, আবহ পরিকল্পক জান্নাতুল পিংকি(নান্দীমুখ), দ্রব্য সম্ভার পরিকল্পক মোহাম্মদ সুলতান, প্রযোজনা অধিকর্তা জসিম উদ্দিন আহমেদ এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে আছেন নাট্যাধার সমন্বয়ক মাশরুজ্জামান মুকুট।
নাটকটিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শেখ আনিস মঞ্জুর সেন্টু (অরিন্দম নাট্য সম্প্রদায়), শাহীন চৌধুরী (কথক নাট্য সম্প্রদায়), বিকিরণ বড়ুয়া(নান্দীমুখ), সায়েম উদ্দিন(প্রতিনিধি নাট্য সম্প্রদায়)সহ নাট্যাধারকর্মি জসিম উদ্দিন আহমেদ, দেবাশিষ রুদ্র, মাসউদ আহমেদ, আশিক আরেফিন, মোহাম্মদ নাছির, মুক্তা বিশ্বাস, মোহাম্মদ রাসেল, মোঃ কাওসার মজুমদার, ফাহমিদা খানম, রূপা আক্তার, নাফিস তাজওয়ার আয়াজ, অপরাজিতা বড়ুয়া, পাপিয়া দাশ জয়া, মাহমুদুল হাসান, সুমিত্রা দাশ রিয়া, তিথি সূত্রধর শিলা, মোঃ ফজলে রাব্বি, মো. আবিদ হোসেন, মোহাম্মদ সুলতান প্রমূখ।