যুক্তরাষ্ট্রের বর্ষীয়ান রাজনীতিক রিপাবলিকান মিশ ম্যাকনেল (৮১)। বুধবার তিনি প্রতিরক্ষা বিষয়ক বিপুল অর্থের একটি বিল নিয়ে কংগ্রেসের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা ইস্যুতে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন। কিন্তু আকস্মিক তিনি ২১ সেকেন্ডের জন্য ‘ফ্রিজ’ হয়ে যান। স্থির দাঁড়িয়ে থাকেন। সোজা সামনের দিকে তাকিয়ে থাকেন পাথর চোখে। বিপদ বুঝতে পেরে সহকর্মীরা দ্রুত এগিয়ে যান। তার কাছে জানতে চান তিনি সুস্থ আছেন কিনা। সিনেটর জন ব্রাসো তার কাছে জানতে চান- আপনি ঠিক আছেন, মিশ? কিছু বলতে চান অথবা আমাদের কি আপনার অফিসে ফিরে যাওয়া উচিত? এ অবস্থায় ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের এ সিনেটরকে দ্রুত ব্রাসোর সহায়তায় পিছন দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। জন ব্রাসো নিজে একজন চিকিৎসক। একই সঙ্গে সিনেটে রিপাবলিকান দলের তিন নম্বর নেতা।
অবশেষে মিশ ম্যাকনেল নিজেকে সুস্থ মনে করায় ১২ মিনিট পরে আবার মঞ্চে ফিরে আসেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
১২ মিনিট পরে সংবাদ সম্মেলনে ফিরে কেনটাকি থেকে নির্বাচিত সিনেটর মিশ ম্যাকনেল বলেন, আমি ভাল আছি। এরপর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। তার একজন সহযোগী জানান, মাথায় কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছিল তার। ছয় বছর মেয়াদি সিনেটর পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ২০২৬ সালে। গত ৮ই মার্চ ওয়াশিংটনে এক নৈশভোজে যোগ দেয়ার পর তিনি সিনেটে অনুপস্থিত ছিলেন। একটি আঘাতের চিকিৎসার জন্য তাকে ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে। তার বুকের একটি হাড়ে ফ্রাকচার দেখা দিয়েছিল। পরে তাকে একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রে নেয়া হয়। এপ্রিলে তিনি কিছুটা সুস্থ হয়ে সিনেটে ফেরেন। তবে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জন ব্রাসো। তিনি বলেন, কয়েক মাস আগে আঘাত পেয়েছিলেন মিশ ম্যাকনেল। এ জন্য তাকে নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন ছিলাম। এখনও আমি উদ্বিগ্ন। এ খবরে ম্যাকনেলের সুস্থতা কামনা করেছেন তার প্রতিপক্ষ ডেমোক্রেট দলের বা সিনেট সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চাক শুমার।
ওয়াশিংটনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেসব রাজনৈতিক ব্যক্তি তাদের বয়স অনেক বেশি। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৮০ বছর বয়সে আবার নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। অন্যদিকে সিনেটরদের গড় বয়স ৬৪ বছরের ওপরে। দাউদের কারণে এ বছর কয়েক মাস ধরে সিনেটে অনুপস্থিত ছিলেন ডেমোক্রেট দলের সিনেটর ডায়ান ফেইনস্টেইন। এই দাউদ এনসেফালাইটিস ও রামসে হান্ট সিন্ড্রোম সহ নানাবিধ জটিলতা সৃষ্টি করে। এ থেকে মুখের ভিতরও ক্ষত সৃষ্টি হতে পারে।
গত মাসে কলোরাডোতে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী একাডেমিতে এক গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তিনি ওভাল অফিসে এখন সবচেয়ে বয়সী ব্যক্তি। ওই অনুষ্ঠানে তিনি হোঁচট খেয়ে পড়ে যান। তবে দ্রুততার সঙ্গেই উঠে দাঁড়ান এবং হেঁটে নিজের আসনে গিয়ে বসেন। এ অবস্থায় নভেম্বরে রয়টার্স/ইপসোস একটি জরিপ পরিচালনা করে। তাতে দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্রের বেশির ভাগ মানুষ অর্থাৎ শতকরা ৬১ ভাগ মানুষ মনে করেন, খুব বেশি বয়সী কংগ্রেস সদস্যরা তাদের জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছেন। এ নিয়ে তারা খুবই অথবা কিছুটা উদ্বিগ্ন।