বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে ঘিরে ঢাকার প্রবেশদ্বার আমিনবাজারে ব্যাপক তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। প্রতিটি গাড়িতেই মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেক করা হচ্ছে। কোথায় যাচ্ছেন, প্রশ্ন করা হচ্ছে। সন্দেহভাজন যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কাউকে আবার গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়া হচ্ছে। তবে ঢাকামুখী সকল দূরপাল্লার পরিবহন ও গণপরিবহনে তল্লাশি চালালেও আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে আসা কোন গাড়িতেই তল্লাশি করতে দেখা যায়নি। শান্তি সমাবেশের ব্যানারযুক্ত গাড়িগুলো পুলিশকে বিশেষ ব্যবস্থায় পার করে দিতে দেখা গেছে। এসময় গাড়ি থামিয়ে পুলিশ সদস্যদের নেতাদের আলাপ করতেও দেখা গেছে। শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই, মানিকগঞ্জ থেকে যুবলীগের প্রায় ২৫০টি গাড়ি কোন বাধা ছাড়াই ঢাকায় প্রবেশ করে।
জানা গেছে, সকাল ১০টার পর থেকে সাভার ধামরাই ও আশপাশের উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঢাকা আরিচা মহাসড়ক দিয়ে গাড়ির বহর ধীরে ধীরে বায়তুল মোকাররমের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। আওয়ামী লীগের ব্যানার-ফেস্টুন সম্বলিত এসব গাড়ি থেকে সরকার সমর্থিত স্লোগান দিতে শোনা যায় নেতাকর্মীদের।
আশুলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য রাকিব হাসান বলেন, শান্তি সমাবেশে যাচ্ছি।
তাহলে আমাদের গাড়ি আটকাবে কেন। আমরা সরকারের লোক। শান্তির পক্ষের লোক। বিএনপি জামায়াতের নৈরাজ্য রুখে দিতে যাচ্ছি। পুলিশ আর আমরা ভাই ভাই আমাদের গাড়িতে কোন তল্লাশি হয়নি। আর হবেও না।
সাড়ে ১২টার দিকে আমিনবাজার এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার পুলিশের চেকপোস্টে আওয়ামী লীগের ব্যানার সংবলিত ও নেতাকর্মী বহনকারী কোনো যানবাহনেই তল্লাশি চালাতে দেখা যায়নি। বরং ব্যানার দেখলেই হাত নেড়ে পার হয়ে যেতে বলা হচ্ছে। তবে অন্যান্য গাড়িতে পুলিশ সদস্যরা তল্লাশি চালাচ্ছেন। গাড়িতে উঠে যাত্রীদের নাম পরিচয় জানতে চাওয়া হচ্ছে। অনেকের মোবাইল চেক করতে দেখা গেছে। কাউকে সন্দেহ হলে গাড়িতে থেকে নামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
যোগাযোগ করা হলে ধামরাই পৌরসভার মেয়র ও ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কবির মোল্লা বলেন, আমরা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার নেতাকর্মী নিয়ে ২ শতাধিক গাড়ি নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছি। দুপুর সোয়া ১টার দিকে তাদের গাড়িবহর ঢাকার আসাদ গেট এলাকা পার হয়। পথে পুলিশের তল্লাশি হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা গাড়িবহর নিয়ে এসেছি কোনো তল্লাশি ছাড়াই। আমাদের কেন চেকপোস্টে থামাবে। আমাদের কেন তল্লাশি করবে।
সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফকরুল আলম সমর বলেন, বিএনপি-জামায়াতের হত্যা, ষড়যন্ত্র ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে যোগ দিতে দেড় শতাধিক গাড়িতে আমরা নেতাকর্মীদের নিয়ে ঢাকার পথে রওনা হয়েছি।
জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, প্রচণ্ড গরমের কারণে এখন আমরা কোনো গাড়িই চেকপোস্টে থামাচ্ছি না। আওয়ামী লীগের গাড়ি বলে যে আমরা ছেড়ে দেব এমন না। সন্দেহ হলে যে কাউকে তল্লাশি করা হবে।