যুক্তরাষ্ট্র ও ভিয়েতনামের মধ্যে চুক্তিকে নতুন এক শীতল যুদ্ধ হিসেবে দেখছে চীন। তবে ভিয়েতনাম এমন যুক্তির সঙ্গে একমত নয়। গত সপ্তাহান্তে ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি নগুয়েন ফু থ্রোং এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তাদের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ককে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যান। স্বাক্ষর করেন চুক্তি। এতে চীনে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তারা বলেছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নতুন এক শীতল যুদ্ধের আবহ সৃষ্টি করছে যুক্তরাষ্ট্র। এ জন্য ওয়াশিংটনকে নসিহত করেছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং। তিনি বলেছেন, আধিপত্য এবং শীতল যুদ্ধের মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে ওয়াশিংটনকে। উল্লেখ্য, জো বাইডেন এবং থ্রোং তাদের মধ্যে ব্যাপক বিস্তৃত কৌশলগত এক অংশীদারিত্ব বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। ভিয়েতনামের সঙ্গে বেইজিংয়ের যে সম্পর্ক আছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তিকে তার সমান হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
মাও নিং বলেছেন, যখন এশিয়ার কোনো দেশের সঙ্গে চুক্তি করবে তখন ওয়াশিংটনের উচিত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক মৌলিক নীতি মেনে চলা। তিনি আরও বলেন, আমরা আঞ্চলিক দেশগুলোর জন্য উচ্চাভিলাষী স্থিতিশীলতা, সহযোগিতা ও উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রকে সম্মান জানাতে বলি। তিনি উল্লেখ করেন অনেকবার বলা হয়েছে যে, ভিয়েতনামের সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্ক বৈদেশিক বিষয়ক যেকোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে শীর্ষ অগ্রাধিকারে। তবে চীনের এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলে পূর্ব এশিয়া ও ওসেনিয়া বিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর এবং প্রেসিডেন্টের স্পেশাল সহকারী মিরা র্যাপ-হুপার বলেন, এটা কোনো শীতল যুদ্ধ নয়। যুক্তরাষ্ট্র যেমন অংশীদারিত্ব রক্ষা করে, ভিয়েতনামের সঙ্গে এটা সেই রকমই আধুনিক অংশীদারিত্ব। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভিয়েতনামের অংশীদারিত্ব মানে এই নয় যে, তাকে ওয়াশিংটন বা বেইজিংয়ের মধ্যে যেকোনো একটিকে শুধু বেছে নিতে হবে।
ভিয়েতনামে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্ক ই. নাপার বলেন, ভিয়েতনামের সঙ্গে নতুন এই সম্পর্ক তেমন কিছুই নয়। তিনি বলেন, এটা আমাদের দুই দেশের বিষয় এবং আমাদের অভিন্ন সমৃদ্ধি, নিরাপত্তা এবং মুক্ত ও অবাধ ইন্দো-প্যাসিফিক এবং মুক্ত দক্ষিণ চীন সাগর বিষয়ক দৃঢ় মূল্যবোধ। উল্লেখ্য, পুরো দক্ষিণ চীন সাগরকে নিজের বলে দাবি করে চীন। তাদের এই দাবির কারণে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অস্বস্তিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মাঝে মাঝেই কোস্টগার্ড ও নৌযান চলাচলে এতে বিঘ্ন ঘটে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোও এই সমুদ্রের মালিকানা দাবি করে। এর মধ্যে আছে ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়া।