জাহেদ কায়সার : চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব উদ্যোগে ও অর্থায়নে এ মাসে নতুন যুক্ত হচ্ছে নতুন দুটি স্ক্যানার মেশিন।বন্দর ব্যবহারকারীরা দীর্ঘদিন ধরে বন্দরের ১২টি গেইটে কন্টেনার স্ক্যানার মেশিন বসানোর দাবি জানিয়ে আসছিলো । তারই প্রেক্কিতে বন্দর কতৃপক্ষ নিজস্ব অর্থায়নে দুটি স্ক্যানার মেশিন বসানো সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। নতুন এ দুটি স্ক্যানার মেশিন বসানো হলে বন্দরে ফিক্সড কন্টেনার স্ক্যানার সংখ্যা দাঁড়াবে ৯ –এ। এছাড়া রয়েছে আরো দুটি মোবাইল স্ক্যানার। যেগুলো এক স্থান থেকে আরেক স্থানে সরিয়ে কাজ করা যায় । চীন থেকে আমদানিকৃত দুটি কনটেইনার স্ক্যানার আগামী ২২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। স্ক্যানার মেশিন দুটি বহনকারী ‘এসআইটিসি হুইমিং’ নামক জাহাজটি গত ৪ সেপ্টেম্বর চীনের ‘তিয়ানজিন জিঙ্গাং’ বন্দর থেকে রওনা দিয়ে বর্তমানে মালেয়শিয়ার পোর্ট কেলাংয়ের হয়ে চট্টগ্রামের পথে রয়েছে। চীনের কনটেইনার স্ক্যানার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান নাকটেক কোম্পানি লিমিটেড স্ক্যানার দুটি বাংলাদেশের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ফাইভ আর এসোসিয়েটের বরাবর শিপমেন্ট করেছে। এসজিএস, আরকম এন্টারপ্রাইজ, ফাইভ আর এসোসিয়েট ও প্যান এশিয়াটিক নামে মোট চারটি প্রতিষ্ঠান দর জমা দেয়। তাদের মধ্যে যোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফাইভ আর এসোসিয়েট চীন থেকে ৯০ কোটি টাকার বিনিময়ে কনটেইনার স্ক্যানার দুটি সরবরাহ করছেন। ইতিমধ্যে স্ক্যানার দুটি স্থাপনের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের ৪ নম্বর গেট ও সিপিএআর গেটে প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। নতুন যুক্ত আধুনিক প্রযুক্তির স্ক্যানারগুলো এক্স–রে বা গামা–রশ্মি ইমেজিং প্রক্রিয়ায় কন্টেনার খোলা ছাড়াই এর ভেতরের রঙিন ছবি তুলতে পারবে। এসব মেশিনে স্ক্যানার ছাড়াও কন্টেনারের ওজন পরিমাপ, রেডিও পোর্টাল মনিটর এবং ইমেজিং সিস্টেম অন্তর্ভুক্ত থাকে। নতুন স্ক্যানারগুলো ‘বোথ ওয়ে’ স্ক্যান ডিরেকশনে স্ক্যানিং করতে সক্ষম। অর্থাৎ আমদানি ও রপ্তানি উভয় কন্টেনার এই স্ক্যানিং মেশিনে করা যায়। তবে স্ক্যানার দুটি আপাতত রপ্তানি পণ্যের কনটেইনার স্ক্যান করতেই ব্যবহার করা হবে। যার ফলে রপ্তানি কনটেইনার স্ক্যান করে শিপমেন্টের প্রথা চালু হওয়ার মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর আন্তর্জাতিক আইএসপিএস কোডের শর্ত পালনে আরো একধাপ এগিয়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক গণমাধ্যমকে বলেন, গত আগস্টে চট্টগ্রাম বন্দরের পাঁচ সদস্যের একটি অভিজ্ঞ টিম চীন গিয়ে স্ক্যানার দুটির পিএসআই ইন্সপেকশন করে এসেছেন। মূলত দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী স্ক্যানার দুটি ঠিক আছে কিনা তা দেখার জন্য তাদেকে স্ক্যানার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান চীন নিয়ে গেছেন। শর্ত অনুযায়ী স্ক্যানার মেশিন প্রস্তুত হওয়ায় সেগুলো শিপমেন্টের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে স্ক্যানারগুলো চীন থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। আমরা আশা রাখি সাগরে আবহাওয়া ঠিক থাকলে আগামী ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্ক্যানারবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছাবে। প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম পোর্ট ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন প্রকল্পের আওতায় অঘোষিত ও বিস্ফোরক জাতীয় পণ্য আমদানির পাশাপাশি নিরাপত্তা ঝুঁকি কমাতে ২০০৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে স্ক্যানিং বাধ্যতামূলক করা হয়।
চট্টগ্রাম বন্দরের নিজস্ব উদ্যোগে এ মাসে আসছে নতুন দুটি স্ক্যানার মেশিন

সংবাদটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন
একটি মন্তব্য করুন