তারা ছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের খুব আস্থাভাজন ও প্রিয়। কিন্তু তারা এখন অদৃশ্য। তারা চীনের উচ্চপদস্থ কিছু কর্মকর্তা। এরমধ্যে আছেন সামরিক ব্যক্তিত্বও। এমন অবস্থায় প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বের প্রতি কি কোনো ঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে! বিশেষ করে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা কি এক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা রাখছেন! সর্বশেষ দীর্ঘ সময় প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শ্যাংফুকে। বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়া হয় তখন, যখন যুক্তরাষ্ট্রের একজন শীর্ষ কূটনীতিক এ বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করেন।
পরে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক রিপোর্টে বলা হয়, জেনারেল লি শ্যাংফু চীনের সেনাবাহিনী পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) জন্য বিদেশ থেকে যেসব অস্ত্র কেনা হয়, তা দেখাশোনা করতেন। সামরিক সরঞ্জাম কেনার বিষয়ে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।
দেশটিতে সেনাবাহিনীর পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণের বিষয় দেখাশোনার দায়িত্ব রকেট ফোর্সেসের। সম্প্রতি এর দু’জন কর্মকর্তা অদৃশ্য হয়ে যান। সামরিক আদালতের একজন বিচারককে সরিয়ে দেয়া হয়। এরপর নতুন করে কানকথা ছড়িয়ে পড়েছে যে, চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের কিছু ক্যাডারের বিরুদ্ধেও তদন্ত করা হচ্ছে।
এই কমিশন সশস্ত্র বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে।
এ পর্যন্ত যাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে তাদের বিষয়ে কোনো সরকারি ব্যাখ্যা দেয়া হয়নি। শুধু বলা হয়েছে ‘স্বাস্থ্যগত কারণে’ তাদেরকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এর ফলে নানা রকম গুজব ডালপালা মেলছে। তবে মূল কাহিনী হলো পিএলএর দুর্নীতির বিরুদ্ধে দমনপীড়ন চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
সেনাবাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। জুলাই মাসে তারা একটি অস্বাভাবিক আহ্বান জানায়। তাতে প্রকাশ্যে গত ৫ বছরের দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংও নিজে এ বিষয়ে অনুসন্ধানে নামেন। তিনি এপ্রিল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সামরিক ঘাঁটিগুলোতে ৫ বার সফর করেন।
চীন ১৯৭০-এর দশকে তাদের অর্থনীতিকে উদারীকরণ করার পর থেকে সেনাবাহিনীতে দুর্নীতি একটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা হয়ে উঠেছে। এ কথা বলেছেন, সিঙ্গাপুরের নানিয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির রিসার্স ফেলো জেমস চার। প্রতি বছর চীন সামরিক খাতে খরচ করে কমপক্ষে এক ট্রিলিয়ন ইউয়ান। এর কিছু অর্থ যায় সরাসরি কেনাকাটা খাতে। এতে স্বচ্ছতায় ঘাটতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে একদলীয় শাসন ব্যবস্থায়।