ফিলিস্তিনের গাজায় ভয়াবহ বোমা হামলা, দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে এশিয়ার দেশে দেশে সংহতি জানিয়ে র্যালি হয়েছে শুক্রবার। মালয়েশিয়াতে এমন র্যালিতে যোগ দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ, মুহিদ্দিন ইয়াসিন। রাজধানী কুয়ালালামপুরে তারা র্যালিতে অংশ নেন। এ সময় হামাসের আকস্মিক রকেট হামলার জবাবে ইসরাইলের নির্মম হামলার নিন্দা জানান তারা।
অন্যদিকে ফিলিস্তিনিদের জন্য তহবিল সংগ্রহের এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। প্রতিবেশী ইন্দোনেশিয়ায় জুমার নামাজে বিশেষ প্রার্থনা হয় মসজিদে মসজিদে। র্যালি হয় রাজধানী জাকার্তা ও দেশের অন্যান্য স্থানে। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় গ্রুপ ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেয়।
শুক্রবার পাকিস্তানের মসজিদগুলো ছিল কানায় কানায় পূর্ণ। এদিন জামায়াতে ইসলামী, জমিয়তে উলেমায়ে ইসলাম সহ ছোট ছোট কিছু গ্রুপ দেশজুড়ে বিক্ষোভ করেছে। এতে অংশগ্রহণকারীদের হাতে ছিল ব্যানার ও প্লাকার্ড। তাতে ছিল পবিত্র আল আকসা মসজিদ ও হামাস নেতাদের ছবি।
তারা ‘লাব্বাইক ইয়া গাজা’ স্লোগান দেন। স্লোগান দেন- ইসরাইল দখলদার বাহিনী। ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র নিপাত যাক। বাংলাদেশে জুমার নামাজের পর রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন রাস্তায় হাজার হাজার মুসল্লি র্যালি করেন। এসব র্যালি থেকে ইসরাইলি পণ্য বর্জনের আহ্বান জানান নেতারা। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের হামলায় সমর্থন দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সমালোচনা করেন তারা।
ভারতের দক্ষিণের রাজ্য তেলাঙ্গানার রাজধানী শহর হায়দরাবাদে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সংহতি প্রকাশের জন্য কিছু মানুষ জমায়েত হলে সেখান থেকে একদল মানুষকে আটক করে স্থানীয় পুলিশ। স্থানীয় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন এই বিক্ষোভের আয়োজন করেছিল। তারা তেল আবিবের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। পুলিশ কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রতিবাদ বিক্ষোভ করার কোনো অনুমতি নেয়নি তারা।
ওদিকে আফগানিস্তানে রাজধানী কাবুল সহ বিভিন্ন প্রদেশে বিশাল বিশাল সব র্যালি হয়েছে। এতে অংশগ্রহণকারীরা ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানান। মুসলিম নেতাদের কণ্ঠকে জোরালো করার আহ্বান জানানো হয়। ফিলিস্তিনিদের রক্ষা করার আবেদন জানানো হয়।
ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের বাদগামেও র্যালি হয়েছে। গাজার মানুষদের সুরক্ষার জন্য প্রার্থনা করেন কমপক্ষে ২০০ বিক্ষোভকারী। তারা এ সময় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল বিরোধী স্লোগান দেন। চিৎকার করে তারা বলেন, গাজার যোদ্ধারা আমরা আছি আপনাদের পাশে।
নিসার হোসেন নামে একজন বিক্ষোভকারী বলেন, বছরের পর বছর ধরে গাজায় বসবাসকারীদের সঙ্গে অমানবিক সহিংসতা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। তাদের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। দখলদারিত্বের অবসান ঘটানোর অধিকার আছে। আঞ্চলিক রাজধানী শ্রীনগরে শুক্রবার প্রধান জামিয়া মসজিদে জমায়েত হয়ে নামাজ বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
ওদিকে ইসরাইলি অ্যাকশনের নিন্দা জানাতে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানেজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া প্যালেসটাইন অ্যাডভোকেসি নেটওয়ার্ক। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, বেসামরিক স্থাপনায় ইসরাইলের হামলার বিষয়ে সতর্কতা দিয়েছে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা। কথা বলা হচ্ছে সামষ্টিক শাস্তি, যুদ্ধাপরাধ নিয়ে। মানবিক পরিস্থিতি এরই মধ্যে ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। বিবৃতিতে তারা বলেন, ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারের পক্ষে অব্যাহতভাবে কথা বলে যাচ্ছেন আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ইসরাইলের সামরিক অভিযানকে যথার্থতা দেয়া কঠিন। ইসরাইলকে বিরত থাকার পরামর্শ দেয়া থেকে বিরত থাকার কারণে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সমালোচিত হচ্ছেন। বুধবার ‘ইসলাম ইন কোরিয়া’ নামের একটি অধিকার বিষয়ক গ্রুপ দক্ষিণ কোরিয়াতে ফিলিস্তিনের পক্ষে র্যালি করেছে। গাজায় ইসরাইলের হামলার নিন্দা জানিয়েছে।