গভীর সাগরে ট্রলারে করে মাছ শিকারে গিয়েছিলেন ১৮ জন জেলে। ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র কবলে পড়ে ভেঙে যায় ট্রলারের পাখা। এরপর ইঞ্জিন বিকল হয়ে ঘণ্টারর পর ঘণ্টা ভাসতে থাকে সাগরে। ছেড়ে দেয় বেঁচে থাকার আশা। শেষমেষ ৯৯৯ এ ফোন পেয়ে সাগরে আটকে পড়া ১৮ জেলেকে উদ্ধার করে কোস্টগার্ড জাহাজ ‘মনসুর আলী’।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজারস্থ কোস্ট গার্ড স্টেশনে থাকা উদ্ধার হওয়া জেলে, মাঝি ও কোস্টগার্ড কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।
বাঁকখালী নদীর কোস্ট গার্ড স্টেশনের জেটিতে নোঙর করা ট্রলার এফবি মায়ের দোয়া। ট্রলারে বসেছিলেন জেলে ইমাম হোসেন। তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র কবলে পড়ে ছেড়ে দিয়েছিলেন বাঁচার স্বপ্ন। ট্রলারের পাখা ভেঙে ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ায় সাগরে ভাসছিলেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। জীবন যায় যায় অবস্থায়, তখনই মনে পড়ে জরুরি সেবা ৯৯৯ এর কথা। অবশেষে ৯৯৯ এ কল দেয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর তাদের উদ্ধার করে কোস্ট গার্ড জাহাজ ‘মনসুর আলী’।
ট্রলারটির মাঝি বাচাঘোনার এলাকার রুহুল আমিন বলেন, কক্সবাজার শহরের মাঝির ঘাট থেকে এফবি মায়ের দোয়া ট্রলার মাছ শিকারে সাগরে যায় ১৪ নভেম্বর। কিন্তু হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়ের আভাস, সঙ্গে উত্তাল সাগর। উপকূলে ফিরে আসার পথেই ভেঙ্গে যায় পাখা, বিশাল ঢেউয়ের আঘাত ও ঝড়ো হাওয়াতে পড়ে ১৮ জেলের জীবন।
রুহুল আমিন বলেন, বেঁচে ফিরব সেই আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু রাখে আল্লাহ মারে কে! ধন্যবাদ জানাই কোস্টগার্ডকে। সঠিক সময়ে তারা আমাদের উদ্ধার করেছেন।
কোস্ট গার্ড কক্সবাজার স্টেশনের ইনচার্জ লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এম সালমান সিদ্দিকী স্বাধীন বলেন, গত ১৪ নভেম্বর এফ বি মায়ের দোয়া নামক একটি ফিশিং ট্রলার কক্সবাজারের মাঝির ঘাট থেকে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে গভীর সমুদ্রে যায়। একপর্যায়ে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে ইঞ্জিন বিকল হয়ে ট্রলারটি নিয়ন্ত্রণহীনভাবে সমুদ্রে ভাসতে থাকে। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে কোস্টগার্ড স্টেশন কক্সবাজার, ইনানী ও কোস্ট গার্ডের নিয়মিত টহল কাজে নিয়োজিত জাহাজ ‘মনসুর আলী’এর অধিনায়ক ক্যাপ্টেন নুর মোহাম্মদ তারিক আজিজ-এর নেতৃত্বে উত্তাল সমুদ্রে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযান চলাকালীন শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) দিবাগত রাত ২টায় ফিশিং ট্রলারসহ ১৮ জন জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া জেলেদের প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। পরে তাদের মালিকপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।