ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার আল শিফা হাসপাতালের নিচে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সুরক্ষিত সুড়ঙ্গ পাওয়ার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে ইসরাইল। যদিও এ ভিডিওকে মিথ্যা দাবি করে, হাসপাতালে গোপন সুড়ঙ্গের কথা অস্বীকার করেছে সংগঠনটি। এছাড়াও দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মুনির আল-বোর্শ বলেন, ইসরাইলের এ অভিযোগ ‘ডাহা মিথ্যা’।
আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার (১৯ নভেম্বর) এক ভিডিও প্রকাশ করে ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলেছে, হামাসের এ সুড়ঙ্গটি ৫৫ মিটার লম্বা এবং ১০ মিটার গভীর। এ সুড়ঙ্গে বিস্ফোরণরোধী দরজা আছে।
ফুটেজে কংক্রিটের ছাদ দেয়া একটি সংকীর্ণ রাস্তা দিয়ে গিয়ে একটি দরজায় দাঁড়ানোর ভিডিও দেখিয়ে ইসরাইলের সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘হামাস এ ধরনের দরজা ব্যবহার করে ইসরাইলি বাহিনীকে তাদের কমান্ড সেন্টারে ঢুকতে বাধা দেয়ার জন্য।’ তবে, দরজার ওপাশে কী আছে তা বিবৃতিতে বলা হয়নি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এ ফুটেজই স্পষ্ট প্রমাণ করছে যে, হাসপাতাল চত্বরে অনেক ভবনই হামাস তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আড়াল রাখার জন্য ব্যবহার করে।
আইডিএফের টেলিগ্রাম চ্যানেলে প্রকাশিত ওই ভিডিও ফুটেজটিতে এক ইসরাইলি সেনাকে টানেলের মধ্যে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। গত ১৭ নভেম্বর দুটি আলাদা ক্যামেরা দিয়ে ফুটেজটি ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
এদিকে, গাজাজুড়ে শত শত কিলোমিটারের অনেক গোপন সুড়ঙ্গ, বাঙ্কার থাকার কথা স্বীকার করলেও হাসপাতালের মতো জায়গায় এমন কোনো সুড়ঙ্গ বা কমান্ড সেন্টার থাকার অভিযোগ বারবারই অস্বীকার করে এসেছে হামাস। এবারও এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরাইলি ভিডিওকে মিথ্যা দাবি করেছে স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি।
ইসরাইল-হামাস সংঘাত গড়িয়েছে দেড় মাসে। এই সময়ের মধ্যে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় অন্তত ১৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
রোববার (১৯ নভেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় গত ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় অন্তত ১৩ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩০ হাজার মানুষ।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে অন্তত সাড়ে ৫ হাজার শিশু এবং সাড়ে ৩ হাজার নারী রয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে অতর্কিত রকেট হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। এর পাল্টা জবাবে টানা প্রায় দেড় মাস ধরে গাজায় নৃশংস গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা।