তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশ পরিবর্তন হয়ে গেছে, আমরা গতবার স্লোগান দিয়েছিলাম ‘আমার গ্রাম আমার শহর’। অর্থাৎ গ্রামগুলোকে শহরের মতো বানাবো।
এখন গ্রাম শহরের মতো হয়ে গেছে। আগে গ্রামের উঠানে গোল ধরে বসে বাদশার কিসসার শুনানো হতো, বাদশা রাতের আঁধারে প্রজাদের দরজায় খাবার দিয়ে আসত। এখন শেখ হাসিনার উন্নয়ন সেই কিসসা কাহিনিকেও হার মানিয়েছে।
তিনি বলেন, ঈদ, পূজা-পার্বণে ১৫ টাকা দামের চাল, ২০০ টাকায় ৩০ কেজি চাল, বিনামূল্যে চাল, ফেয়ার প্রাইজ কার্ড, টিসিবির কার্ড, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, স্বামী পরিত্যক্ত ভাতা, পঙ্গু ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ ১৮ রকমের ভাতা দিচ্ছে সরকার। আবার নারীদের কাছে মোবাইলে সরকারের টাকা পৌঁছে যায়। এসব আমরা আগে ছোট থাকতে কিস্সা-কাহিনিতে শুনতাম। এখন মানুষের মোবাইলে টাকা পাঠিয়ে দিচ্ছে শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চট্টগ্রাম-৭ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা, মরিয়মনগর, চন্দ্রঘোনা কদমতলি ও স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ এই জনসভার আয়োজন করে। পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি আরিফুল ইসলাম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিমের সঞ্চালনায় রোয়াজারহাট রাঙ্গুনিয়া ক্লাব মাঠে আয়োজিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন পৌরসভার মেয়র মো. শাহজাহান সিকদার। এর আগে বিকেলে ড. হাছান মাহমুদ রাঙ্গুনিয়ার পোমরা ইউনিয়নে গণসংযোগ ও বিভিন্ন পথসভায় বক্তব্য দেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ১৫ বছর আগে কাপ্তাই সড়ক ছাড়া রাঙ্গুনিয়ায় আর কোনো কার্পেটিং রাস্তা ছিল না, এখন রাঙ্গুনিয়ার অভ্যন্তরে কার্পেটিং ছাড়া কোন রাস্তাটা আছে সেটি গুণে দেখতে হবে। যেখানে পানি উঠে সেখানে করা হয়েছে আরসিসি ঢালাই রাস্তা। সব রাস্তার পাশে এখন সুন্দর সুন্দর পাকা ঘরবাড়ি। গ্রামে গ্রামে টেলিভিশন ডিস এন্টেনা, ওয়াইফাই লাইন, অধিকাংশ বাড়িতে এখন এয়ার কন্ডিশন চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, পনের বছর ধরে আপনারা আমাকে তিনবার এমপি নির্বাচিত করেছেন। এই ১৫ বছরে আমি কী করেছি সেই কৈফিয়ত আপনারা না চাইলেও আমার দায়িত্ব হচ্ছে কৈফিয়ত দেওয়া। আমি প্রথমেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমি শুধু দলের এমপি হব না, রাঙ্গুনিয়ার যেকোনো মানুষ আমার কাছে গেলে সে কোন দলের, কোন মতের বা পথের সেটি দেখিনি। আমার কাছে আসলে যে দল বা মতেরই হোক না কেন, তার উপকার করার চেষ্টা করেছি। আমার ধর্ম হচ্ছে কারো অপকার না করা, উপকার করা।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আগে কার্পেটিং রাস্তা ছিল শহরের মধ্যে। এখন গ্রামের সব রাস্তা-ঘাট পাকা হয়ে গেছে। কোনো জাদুর কারণে এই পরিবর্তন হয়নি, এগুলো সম্ভব হয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার জাদুকরী নেতৃত্বের কারণে। গ্রামের যেই ছেলেটি ১৫ বছর আগে বিদেশ গেছে, সে এখন ফিরে এসে রাঙ্গুনিয়ায় নিজের গ্রাম ও বাড়িঘর চিনতে পারবে না।
পোমরা ইউনিয়নে গণসংযোগকালে পথসভায় ড. হাছান ভোটারদের উদ্দেশে বলেন, ‘রাষ্ট্র আপনাকে ভোটের অধিকার দিয়েছে, তাই ভোট দেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। ভোট কেন্দ্রে গিয়ে সেই অধিকার প্রয়োগ করতে হবে। ৭ তারিখ আপনার এই অধিকার প্রয়োগ করতে ভোট কেন্দ্রে সকাল সকাল যাবেন। যাকে খুশি তাকে ভোট দেবেন। আমরা নৌকা মার্কায় ভোট চাই। সুষ্ঠু সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। সবাই লাইন ধরে যেভাবে ভোট দেয়, ঠিক সেভাবেই ভোট অনুষ্ঠিত হবে। সেই ভোটে নৌকার ধস নামানো বিজয় হবে ইনশাআল্লাহ। ’
জনসভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ নেতা স্বজন কুমার তালুকদার, গিয়াস উদ্দিন খান স্বপন, শামসুদ্দোহা সিকদার আরজু, বদিউল খায়ের লিটন চৌধুরী, মুজিবুল হক হিরু, মো. নূর উল্লাহ, আইয়ুব রানা, নাছির উদ্দীন রিয়াজ, শৈবাল চক্রবর্তী, মো. হারুন সওদাগর, মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, ভাস্কর সাহা, মোরশেদ তালুকদার, সিরাজুল ইসলাম, দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।