চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মমতাজ বেগম রিক্তা নামে বিউটি পার্লারের মালিক হত্যার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই যুবককে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। তারা হচ্ছেন, রিক্তার ভাইয়ের ছেলে শুভ এবং বোনের ছেলে বাপ্পি। তবে বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) রাত ১০টা পর্যন্ত এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ড) প্রদীপ মন্ডল জানান, এরইমধ্যে নিহতের স্বামী রাকিবুল হাসান দুবাই থেকে দেশে ফিরেছেন। স্ত্রীর দাফনের পর এ ঘটনায় মামলা করবেন তিনি।
এর আগে বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টায় ফরিদগঞ্জ উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের চরমান্দারী গ্রামের নিজ বসতঘর থেকে রিক্তা নামে এই নারীর ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের ক্লু খুঁজে পেতে থানা পুলিশের সঙ্গে ডিবি পুলিশ এবং পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করেছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত জানান, নিহত মমতাজ বেগম রিক্তার স্বামীর বাড়ি চট্টগ্রাম। তার স্বামী রাকিবুল হাসান দুবাই প্রবাসী। বাবার বাড়িতে বসবাস করলে তবে তিনি নি:সন্তান ছিলেন।
তিনি আরও জানান, স্পর্শকাতর এই হত্যাকাণ্ড গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তাই জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) পঙ্কজ কুমার দে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) রাশেদুল হক চৌধুরীকে বিশেষ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এরইমধ্যে তারা দুইজন একাধিকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে কী কারণে এবং কারা এমন হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। আর সেই প্রশ্নের সমাধান খুঁজতে পুলিশের একাধিক দল মাঠে নেমেছে। খুনের আগে তার সঙ্গে কারও বিরোধ, কিংবা অন্য কোনো কারণে শত্রুতা আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ফরিদগঞ্জ থানার পুলিশ জানায়, বুধবার সন্ধ্যার পর ফরিদগঞ্জে গৃদকালিন্দিয়া বাজারের নিজ বিউটি পার্লার বন্ধ করে বাড়ি ফেরেন মমতাজ বেগম রিক্তা। তার কিছু সময় পর খুন হন তিনি। ঘাতকরা তার মাথায় আঘাত এবং হাত ও পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে কম্বল পেঁচিয়ে রক্তাক্ত মরদেহ বসতঘর লাগোয়া টয়লেটে রেখে গাঁ ঢাকা দেয়। তবে রাত ১০টায় রিক্তার বোনের ছেলে বাপ্পি বাড়ি ফিরে এমন দৃশ্য দেখেন। ঘটনাটি স্বজনদের জানানো হলে তারা জরুরি পরিষেবা ৯৯৯ নাম্বারে কল করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
এদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে রিক্তার মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। পরে বিকেলে গ্রামের বাড়িতে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।