সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বাবা-মা ও মেয়েকে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলছে পুলিশ। পাশাপাশি হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কয়েকটি সূত্র ধরে কাজ করছে।
বুধবার সকালে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে মানবজমিনকে বলেন, মঙ্গলবার রাতে নিহত বিকাশের স্ত্রীর বড় ভাই সুকমল চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলাটি করেছে। তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, মামলার বাদী সুকমলের বাড়ি বগুড়ার নন্দীগ্রামে। মামলার এজাহারে পূর্বশত্রুতার জেরে বোন জামাই, বোন ও ভাগ্নিকে হত্যা করা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
নিহত বিকাশ সরকার হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের তাড়াশ উপজেলা শাখার কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। তারা সাত ভাইবোন। তারা পাঁচ বোন ও দুই ভাই। বিকাশ সবার ছোট ছিলেন।
প্রসঙ্গত, তাড়াশ উপজেলার পৌর এলাকার বারোয়ারি বটতলা মহল্লায় তিনতলা নিজ বাসায় থাকতেন ব্যবসায়ী বিকাশ সরকার, তার স্ত্রী স্বর্ণা সরকার ও তাদের দশম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে পারমিতা সরকার তুষি। গেল শনিবার সন্ধ্যা থেকে তাদের খোঁজ না পেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন স্বজনেরা। পরে স্থানীয় প্রতিবেশীদের মাধ্যমে খোঁজ নিলে জানতে পারেন বাসা তালাবদ্ধ।
পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে বাসার তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে বিকাশ ও তার স্ত্রী কন্যার গলাকাটা মরদেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে র্যাব, পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআইয়ের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করে।
এ ব্যাপারে উল্লাপাড়া সার্কেলের (উল্লাপাড়া-তাড়াশ) সহকারী পুলিশ সুপার অমৃত কুমার সূত্রধর বলেন, মামলার তদন্ত চলছে। আশা করছি খুব শিগগিরই রহস্য উদঘাটন হবে এবং দায়ীদের গ্রেপ্তার করা হবে। মঙ্গলবার মরদেহগুলো উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে তিনি জানান।
সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মুনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে তিনজনের মরদেহ হাসপাতালে এসেছে। আজ সকাল থেকেই তাদের ময়নাতদন্তের কাজ চলছে। দুপুরের দিকে মরদেহগুলো হস্তান্তর করা হবে।