নিঃসন্দেহে আগের সময়ের তুলনায় আজ মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। সাধারণত নারীরা পুরুষদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচেন এমন একটা প্রবণতা বিশ্বজুড়ে লক্ষ্য করা গেছে। তবে বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে জীবনকালের এই ব্যবধান ধীরে ধীরে কমে এসেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পুরুষদেরও আয়ু এখন বৃদ্ধি পেয়েছে।
নিউ সায়েন্টিস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত শতাব্দীতে সারা বিশ্বে মানুষ গড়ে বেশি দিন বাঁচে। দেশগুলি ধনী হওয়ার সাথে সাথে এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই ইতিবাচক বিকাশ সত্ত্বেও, পুরুষ এবং নারীরা ধারাবাহিকভাবে ভিন্ন ভিন্ন জীবন প্রত্যাশা অনুভব করেন। নারীরা সাধারণত পুরুষদের তুলনায় বেশি দিন বাঁচেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘এইচএএলই’ সূচক দিয়ে কোনোরকম বড় দুর্ঘটনা বা রোগে আক্রান্ত হওয়া ছাড়াই নারী ও পুরুষের বেঁচে থাকার সময়কাল হিসাব করা হয়। সেখানে দেখা গেছে যে, আমেরিকান পুরুষরা ৬৭ বছর বয়স পর্যন্ত সুস্বাস্থ্য নিয়ে বেঁচে থাকেন এবং এক্ষেত্রে আমেরিকান নারীরা ৭০ বছর পর্যন্ত পুরোপুরি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে বেঁচে থাকেন।
নারী পুরুষের আয়ুষ্কালের মধ্যে এ পার্থক্য নতুন কিছু নয়, বরং বিশেষজ্ঞরা এটি দশকের পর দশক ধরে লক্ষ্য করছেন। অস্ট্রেলিয়ার সাউথ ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোসাইকিয়াট্রি বিভাগের অধ্যাপক ডা পারমিন্দার সাচদেব মানষের আয়ুষ্কাল নিয়ে গবেষণা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এটা শুধুমাত্র আমেরিকার ক্ষেত্রেই নয়, সব সমাজের ক্ষেত্রেই সত্য।’
এই পর্যবেক্ষণগুলির পিছনের কারণগুলি বোঝার জন্য গবেষকরা ১৯৯০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে ১৯৪টি দেশে মৃত্যুর তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। তাদের আয়ু প্রবণতার উপর ভিত্তি করে, গবেষকরা এই দেশগুলিকে পাঁচটি স্বতন্ত্র গ্রুপে শ্রেণীবদ্ধ করেছেন।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সর্বোচ্চ গড় আয়ু সহ গ্রুপটি অস্ট্রেলিয়া, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং পশ্চিম ইউরোপের অন্যান্য অংশের মতো সর্বোচ্চ আয়ের দেশগুলি নিয়ে গঠিত। সর্বনিম্ন আয়ু সহ গ্রুপটি শুধুমাত্র রুয়ান্ডা এবং উগান্ডা নিয়ে গঠিত। এই দেশগুলিতে পুরুষ এবং নারীরা কতদিন বেঁচে থাকে তা তুলনা করার সময়, সবচেয়ে বড় পরিবর্তন ঘটেছিল রুয়ান্ডা এবং উগান্ডায় পুরুষদের মধ্যে, যাদের গড় আয়ু ১৯৯০ সালে মাত্র ৩০.৮৫ বছর ছিল, তা ২০১০ সালে ১৪.৩৭ বছর বেড়ে ৪৫.২২ বছর হয়েছে। এই দেশগুলোর নারীদের মধ্যে গড় আয়ু মাত্র ০.৯৪ বছর বেড়ে ৫০.৩৭ বছর থেকে ৫১.৩১ বছর হয়েছে।