চাচা-ভাতিজা ইবরাহিম জাদরান ও নূর আলি জাদরান মিলে তৃতীয় দিন দারুণ এক জুটি গড়েছিলেন। তাতে মনে হচ্ছিল, অন্তত লড়াকু পুঁজি পেতে পারে আফগানিস্তান। কিন্তু চতুর্থ দিনে তেমন কোনো আশা জাগাতে পারেনি আফগানরা। কোনো মতে ইনিংস পরাজয় এড়ালেও বোলারদের লড়াই করার মতো পুঁজি এনে দিতে পারেনি তারা। আয়েশেই বড় জয় পেয়েছে শ্রীলঙ্কা।
সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) কলোম্বো টেস্টের চতুর্থ দিনে আফগানিস্তানকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। তৃতীয় দিনে ২৪১ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়বার ব্যাট করতে নামে আফগানিস্তান। ইবরাহিম জাদরানের সেঞ্চুরি ও রহমত শাহর অর্ধশতক এবং নূর আলি জাদরান ও নাসির জামালের চল্লিশোর্ধ্ব ইনিংসে ভর করে ২৯৬ রান করে আফগানিস্তান। ফলে জয়ের জন্য শ্রীলঙ্কার লক্ষ্য দাঁড়ায় মাত্র ৫৬ রান। ব্যাট করতে নেমে দিমুথ করুনারত্নে ও নিশান মাদুশকা মিলে মাত্র ৭.২ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে দেন লঙ্কানদের। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১৭৪ রানের বিনিময়ে ৮ উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন প্রবাথ জয়াসুরিয়া।
তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে ব্যাট করতে নেমে ইবরাহিম ও নূর আলি মিলে দারুণ শুরু এনে দেন আফগানদের। ১০৬ রান আসে এই জুটিতে। ৪৭ রান করা নূর আলিকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে জুটি ভাঙেন আশিথা ফার্নান্দো।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতেও দারুণ গতিতে এগুচ্ছিল আফগানিস্তান। আগের দিন ১ উইকেটের বিনিময়ে ১৯৯ রান তুলে দিন শেষ করে আফগানিস্তান। সেঞ্চুরি তুলে নেন ইবরাহিম। এদিন ইনিংস হার এড়ানোর কাছাকাছি দলকে পৌঁছে দেন ইবরাহিম জাদরান ও রহমত শাহর জুটি। কিন্তু ২১৪ রানের মাথায় কাশুন রাজিথার বলে উইকেটের পেছনে সামারাবিক্রমার হাতে ধরা পড়েন রহমত। ১১৯ বল মোকাবেলা করে ৫ চারে ৫৪ রান করেন তিনি।
রহমতের বিদায়ের সঙ্গেই মড়ক লাগে আফগানদের ইনিংসে। জ্বলে ওঠেন জয়াসুরিয়া। ২৩৭ রানের মাথায় শুরুটা করেন সেঞ্চুরি হাঁকানো ইবরাহিমকে দিয়ে। ২৫৯ বলে ১২ চারে ১১৪ রান করে জয়াসুরিয়ার বলে বোল্ড হয়ে যান তিনি। দলের খাতায় আর ৯ রান যোগ হতেই অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদিকেও (১৮) হারায় তারা। এরপর একে একে কাইস আহমেদ (১), জিয়াউর রহমান (০), নাভিদ জাদরানকে ফিরিয়ে দেন জয়াসুরিয়া, পূর্ণ করেন ইনিংসের পাঁচ উইকেট। মাঝে ফার্নান্দো ইকরাম আলি খিলকে ফিরিয়ে দেন। মোহাম্মদ সালেমকে (২) রানে ফিরিয়ে আফগানদের ইনিংস মুড়িয়ে দেন ফার্নান্দো। ৫৯ রান তুলতেই শেষ ৭ উইকেট হারায় আফগানিস্তান।
শ্রীলঙ্কার পক্ষে জয়াসুরিয়া ৪৭ ওভারে ১০ মেডেনসহ ১০৭ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন। আশিথা ফার্নান্দো ২১.৩ ওভারে ৬৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন। কাশুন রাজিথা ৫৯ রান দিয়ে বাকি ২ উইকেট নেন।
৫৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৭.২ ওভারেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন দিমুথ করুনারত্নে ও নিশান মাদুশকা। ২২ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে ৩২ রান করেন করুনারত্নে। ২৩ বলে ২২ রান করেন মাদুশকা।