মিয়ানমারের সাগাইন অঞ্চলে স্বর্ণের খনির প্রাণকেন্দ্র হোমালিন টাউনশিপের শয়ে পিই আই টাউন দখলে নিতে ব্যর্থ হয়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার প্রায় ৪০০ সেনা সদস্য। শহরটি দখলে নিতে ১০ দিন ধরে তারা তীব্র লড়াই করছিল জাতিগত বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু এতে সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষতি হয়। এরপর শনিবার সেখান থেকে যুদ্ধে ক্ষান্তি দিয়ে পালায় তারা। বিদ্রোহী গ্রুপগুলোকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য ইরাবতী। এতে বলা হয়, সামরিক জান্তাবিরোধী বেসামরিক ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেসের (পিডিএফ) কিছু গ্রুপ গত বছর ২২শে নভেম্বর থেকে চিন্দুইন নদীর পূর্ব তীরে ছোট্ট এই শহরটি পুরোপুরি তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। তাদের কাছ থেকে শহরটি দখলে নেয়ার জন্য সামরিক জান্তার বাহিনী অভিযান শুরু করে ২৬শে জানুয়ারি থেকে।
এতে অংশ নেয় হোমালিন টাউনশিপভিত্তিক লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন ২৭২। তাদের সঙ্গে যুক্ত আছে মিত্র শান্নি ন্যাশনালিটিজ আর্মি এবং জান্তাপন্থি মিলিশিয়া পিউ শয়ে হতি। সাগাইং অঞ্চলের নিচু এলাকায় পিডিএফের বিরুদ্ধে লড়াই করছিল সামরিক জান্তার কয়েকটি ইউনিট। কিন্তু তারা শয়ে পিই আই টাউন দখলে নিতে ব্যর্থ হয়।
সেখানে অভিযানে সামরিক জান্তা যুদ্ধবিমান এবং এমআই-২ হেলিকপ্টার ব্যবহার করে। কিন্তু বিদ্রোহীদের সঙ্গে মুখোমুখি লড়াইয়ে মারাত্মক পরাজয় স্বীকার করে তাদের স্থলবাহিনী। বিদ্রোহীদের প্রতিরোধ যোদ্ধারা সামরিক জান্তার বাহিনীকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। তাদের খাদ্য সরবরাহ এবং সামরিক সরঞ্জামের সবরাহ বন্ধ করে দেয়। এর ফলে সামরিক জান্তা শুধু হেলিকপ্টারে করে তাদের কাছে খাদ্য ও গোলাবারুদ সরবরাহ দিতে থাকে।
পিডিএফ এখন উন্নত অস্ত্রে সজ্জিত। হোমালিনের পিডিএফ ব্যাটালিয়ন ৩-এর যোদ্ধা কো মুয়াং হতু বলেন, সামরিক জান্তার ধারণার চেয়েও বেশি অভিজ্ঞ বিদ্রোহী যোদ্ধারা। তিনি আরও বলেন, জান্তা সরকারের বাহিনী ওই শহরটিতে হামলা চালায়। তারা মনে করেছিল আমরা অন্য পিডিএফ বাহিনীর মতো, যাদের কাছে স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রের অভাব রয়েছে। কিন্তু আমরা অস্ত্রে সুসজ্জিত। পাহাড় ও বনে ঘেরাও করে রাখার কারণে এ অঞ্চলে যুদ্ধে আমাদের সুবিধা হচ্ছে। এর আগের সংঘর্ষ থেকে আমাদের যোদ্ধাদের অনেক বেশি অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়েছে। এ কারণে, জান্তা বাহিনী আমাদেরকে পরাজিত করতে পারেনি।
এর ফলে শনিবার রাতে ওই শহর থেকে পালিয়েছে সামরিক জান্তার বাহিনী। পিডিএফ বাহিনী বলেছে, শহরের কাছে জান্তার অবস্থানস্থলের কাছে তারা ১৫টি মৃতদেহ সমাহিত অবস্থায় আবিষ্কার করেছে। সেখানকার যুদ্ধে জান্তা বাহিনীর আরও ৪০ সেনা সদস্য আহত হয়েছে। ফলে বাকি সদস্যরা চিন্দুইন নদী পাড়ি দিয়ে পালিয়েছে।