মাদক ও সংকীর্ণতামুক্ত সমাজ গড়তে শিশু, তরুণ, যুবকদের হাতে বই তুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সিআরবির শিরীষতলায় চসিক আয়োজিত অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।
চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ, চট্টগ্রাম নাগরিক সমাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতায় সম্মিলিত এ বইমেলা হচ্ছে।
মেয়র বলেন, বইমেলায় আজ হাজার হাজার বইপ্রেমীর উপস্থিতি প্রমাণ করেছে চট্টগ্রামবাসী বইমুখী।
নতুন প্রজন্ম বইমেলায় আসবে, ঘুরবে। তারা বই কিনবে, পড়বে। পড়তে পড়তে বইয়ের নেশায় পাগল হবে। মাদকের নেশা থেকে দূরে থাকবে। বইমেলা প্রাণের মেলা।
মেয়র বলেন, একুশ আমাদের চেতনার উৎস। একুশের চেতনাকে ধারণা করে আমরা এগিয়ে যাব এ হোক আমাদের শপথ।
সন্ধ্যায় মেয়র বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, বইমেলার সঙ্গে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য জড়িত৷ বইমেলাকে সফল করতে মেলার নিরাপত্তার জন্য আমরা সচেষ্ট থাকব।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, বইমেলার উপযোগী কোনো খাসজমি পাওয়া গেলে সেখানে বইমেলাসহ বিভিন্ন আয়োজনের জন্য স্থায়ীভাবে ইনশাআল্লাহ বরাদ্দ পাওয়া যাবে৷
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ রেলওয়ের (পূর্বাঞ্চল) মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম মেলার আয়োজন করায় চট্টগ্রাম সিটি মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান৷
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহাম্মদ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, চসিকের শিক্ষা স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জুসহ কাউন্সিলরবৃন্দ, সচিব খালেদ মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেমসহ বিভাগ ও শাখা প্রধান এবং চসিকের উপ-সচিব আশেকে রসুল টিপু, সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বাবু, সাধারণ সম্পাদক আলী প্রয়াস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷
এবারের আয়োজনের ২৩ দিনজুড়ে রবীন্দ্র উৎসব, নজরুল উৎসব, লোক উৎসব, মরমি উৎসব, বসন্ত উৎসব, তারুণ্যের উৎসব, নৃগোষ্ঠী উৎসব, শিশু উৎসব, লেখক সমাবেশ, যুব উৎসব, নারী উৎসব, চাটগাঁ উৎসব, মুক্তিযুদ্ধ উৎসব, পেশাজীবী সমাবেশ, কবিতা আবৃত্তি ও ছড়া উৎসব, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, কুইজ প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, গুণীজন সংবর্ধনা, সম্মাননা পদক এবং সাহিত্য পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান থাকবে।
বইমেলায় বাতিঘর, প্রথমা, অন্যধারা, সাহিত্য বিচিত্রা, মূর্ধন্য, লাবণ্য, তৃতীয় চোখ, আবির প্রকাশন, গলুই, বলাকা, খড়িমাটি, শব্দশিল্প, কাকলী, কালধারা, বিদ্যানন্দ, কথাপ্রকাশ, নন্দন, শৈলী প্রকাশন, বলাকা, ইতিহাসের খসড়া, রাদিয়া, চন্দ্রবিন্দু, গল্পকার, প্রজ্ঞালোক, নালন্দা, শিশুপ্রকাশ, প্রতীক, আদিগন্ত, ভোরের কাগজ প্রকাশন, শিখা, সত্যয়ন, নন্দন, শালিক, কথাবিচিত্রা, কথা প্রকাশ, আফসার ব্রাদার্স, বাবুই, গাজী, কিডস পাবলিকেশন, হাওলাদার, ফুলঝুড়ি, নাগরী, ফুলকি, জ্ঞানকোষ, কিংবদন্তি, প্রথমা, দ্বিমত, সালফি, ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, মাইজভাণ্ডারী প্রকাশন, আলোকধারা বুকস, লাল সবুজ, অনিন্দ্য প্রকাশ, গ্রন্থকুটির, চারুলিপি, কারেন্ট বুক সেন্টার, বাংলাদেশ শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে।
উদ্বোধনী দিন বইমেলা মঞ্চে মেলায় সংগ্রামে-আন্দোলনে আলোকচিত্র সংকলন ‘গৌরবগাথায় শেখ হাসিনা’’ এবং ‘৬৯ থেকে ৭১’ দুটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়৷
আগামী ২ মার্চ পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বইমেলা চলবে।