৭ই জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এতো সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনে অতীতে কখনো হয়নি দাবি করে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, অপ্রতিরোধ্য গতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে, দেশে-বিদেশে কোন নালিশ করে কোন লাভ হবে না। জনগণ ভোট দেবে না, তাদের প্রতি কোন আস্থা-বিশ্বাস নেই-এটা জেনেই নির্বাচনে আসেনি বিএনপি। দেশে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে বলেই বাংলাদেশ এখন এক বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। দেশের এই অগ্রযাত্রা কেউ ব্যহত করতে পারবে না।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সমাপনি অধিবেশনে দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ইসরাইলের মতো বিএনপি বাংলাদেশের জন্য আজরাইল হয়ে এসেছে। তাদের নেতারা বলেন তাদের অনেক রাজবন্দী কারাগারে আছে। আমার প্রশ্ন- রাজবন্দী কাকে বলে? যারা আগুন দিয়ে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে, নাশকতা ও অগ্নিসন্ত্রাস করে তারা কী রাজবন্দী? এরা সন্ত্রাসী-জঙ্গী-হত্যাকারী। এদের কেউই রেহাই পেতে পারে না, এটাই বাস্তবতা।
সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্যে করে সংসদ নেতা বলেন, প্রত্যেকে নিজ নিজ আসনে যারা এসব নাশকতাকারী-অগ্নিসন্ত্রাসী আছে তাদের খুঁজে বের করতে হবে, মামলাগুলো যেন ঠিকভাবে নিষ্পত্তি শেষে অপরাধীরা শাস্তি পায় তা দেখতে হবে। এদের হাত থেকে প্রধান বিচারপতির বাসভবন, বিচারপতিদের বাসভবন, পুলিশ, সাংবাদিক এমনকি নারীরাও রেহাই পায়নি। লন্ডন থেকে হুকুম দেয়, আর এখানে তাদের লোকেরা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করে। আবার অগ্নিসন্ত্রাস করে সেই ছবিও লন্ডনে পাঠাতে হয়।
তিনি বলেন, সুদূরে নিরাপদ আশ্রয় থেকে হুকুম পেয়ে যারা এখানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে এবং ছবি পাঠাচ্ছে- তারা তো সেই আলামত নিজেরাই প্রকাশ করছে।
তাদের গ্রেপ্তার করলে তারা রাজবন্দী হয় কীভাবে? এসব সন্ত্রাসী-নাশকতাকারীদের প্রতিরোধ করতে হবে। এদের ব্যাপারে দেশবাসীকেও সদা সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আরও আলোচনায় অংশ নেন সংসদ উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী ও সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন। সমাপনি বক্তব্যে রাখেন বিরোধী দলের নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। আলোচনার পর কন্ঠভোটে সর্বসম্মতক্রমে রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনীত প্রস্তাবটি গ্রহণ করে জাতীয় সংসদ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ই জানুয়ারির নির্বাচন একটি দল ও তাদের জোটের কিছু সঙ্গীরা নির্বাচনে অংশ নেয়নি। বিএনপি নির্বাচন চায় না, কারণ তারা জানে তারা জনগণের ভোট পাবে না। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে। দেশের জনগণ স্বতস্ফুর্তভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিলিয়ে মোট এক হাজার ৯৭০ প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। ৭ই জানুয়ারির নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও অবাধ হয়েছে, দেশের জনগণ স্বতস্ফুর্তভাবে অংশ নিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিয়েছে। এই নির্বাচনে নারী এবং দেশের প্রথম ভোটার তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতি ছিল উল্লেখ করার মতো। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২২৪টি, স্বতন্ত্র ৬১ জন, বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ১১টি এবং জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও কল্যাণ পার্টির একজন করে নির্বাচিত হয়েছেন।