ইরাকের উত্তরাঞ্চলে সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে তুরস্ক। ওই অঞ্চলে থাকা কুর্দি যোদ্ধাদের আরও দক্ষিণ দিকে ঠেলে দেয়াই এই অভিযানের উদ্দেশ্য। এছাড়া সেখানে থাকা একটি নতুন বাণিজ্য রুটকে নিরাপদ করতেও কাজ করবে তুরস্কের সেনাবাহিনী। দেশটির এই পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত এক সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে মিডল ইস্ট আই।
খবরে জানানো হয়, একাধিক অভিযান চালানো হতে পারে ইরাকের অভ্যন্তরে। মূলত কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে টার্গেট করা হবে। গত বছর থেকে কুর্দি বাহিনীর হামলায় অন্তত কয়েক ডজন সেনা হারিয়েছে তুরস্ক। এ নিয়ে তুরস্কের অভ্যন্তরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই দেশটির কৌশল নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।
কুর্দিদের অনুপ্রবেশ থামাতে উঁচু নজরদারি টাওয়ার নির্মাণ করেছিল তুরস্ক। কিন্তু এরপরেও সফলভাবে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে গেছে বাহিনীটি। তুরস্কের আরেক সূত্র মিডল ইস্ট আইকে জানিয়েছে, তুরস্কের প্রধান উদ্দেশ্য একদমই স্পষ্ট।
মেটিনা ও গারাতে কুর্দিদের উপস্থিতি ইরাকের নতুন বাণিজ্য রুটের জন্য বড় হুমকি।
উপসাগরীয় এলাকা থেকে ইরাকের মধ্য দিয়ে তুরস্ক পর্যন্ত ওই সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় ১২০০ কিলোমিটার। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন যে, আমরা এই এলাকা থেকে কুর্দিদের সরাতে এবং ওই এলাকার নির্মাণ প্রকল্পের সুরক্ষা নিশ্চিতে কাজ করবো। এটি হবে এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো ঘটনা।
শীগগিরই ওই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে চায় তুরস্ক, ইরাক ও অন্য আরব দেশগুলো। এই সড়কটি নির্মাণ হলে ইরাক সহজেই তুরস্কে পণ্য পাঠাতে পারবে। এছাড়া নির্মাণ করা হবে উচ্চগতির রেল লাইনও। ওই লাইন দিয়ে ঘণ্টায় ৩০০ কিলোমিটার গতিতে যাত্রী ও পণ্য পাঠানো যাবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে ১৭ বিলিয়ন ডলার দরকার পড়বে। অপরদিকে এই সড়কের কারণে বছরে অন্তত চার বিলিয়ন ডলার করে আয় হবে। সৃষ্টি হবে কমপক্ষে এক লাখ চাকরি।
এ সপ্তাহে তুরস্কের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসার গুলার বলেন, ইরাকের ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার অভ্যন্তরে সেনা মোতায়েন করতে পারে আঙ্কারা। এছাড়া ইরাকের রাজধানী বাগদাদে একটি যৌথ অপারেশন সেন্টারও চালু করতে চায় দেশটি। বহুদিন ধরেই কুর্দিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইরাকের ওপর চাপ দিয়ে আসছে তুরস্ক।