মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন ২৩৭-এর সদর দফতর (হেডকোয়ার্টার) দখল করে নেয়ার দাবি করেছে কাচিন ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্মি (কেআইএ) ও তার মিত্ররা। ভামো জেলায় হামলার এক সপ্তাহ পরে তারা ওই সদর দফতর দখল করে নেয়। কেআইএ’র মুখপাত্র কর্নেল নাওয়া বু বলেন, মোমাউক শহরের কাছে দাসাই গ্রামের পাশে ওই ঘাঁটি তারা দখলে নিয়েছে বৃহস্পতিবার। তিনি দাবি করেন, গত সপ্তাহে তাদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে সামরিক জান্তার কমপক্ষে ২০টি আউটপোস্ট। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইরাবতী।
কর্নেল নাউ বু বলেন, প্রথমে আমরা ওই ঘাঁটির চারপাশে সব বাংকার দখল করি। তারপর প্রধান কার্যালয় আমাদের দখলে আসে। ওই এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করছে আমাদের সেনারা। তবে এই রিপোর্ট নিরপেক্ষ সূত্র থেকে যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে ইরাবতী। এতে বলা হয়, এই অপারেশনে যুক্ত ছিল কেআইএ, আরাকান আর্মি, কাচিন পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) ও অন্য গ্রুপগুলো। তাদের হামলার জবাবে মামুউকের কাছে লাইজাতে গোলা ও বিমান হামলা করেছে সামরিক জান্তা।
এখানেই কেআইএর প্রধান কার্যালয়। পিডিএফ বলেছে, ব্যাটালিয়ন ঘাঁটিটির পতন হয়েছে। ফলে সামরিক জান্তার সেনারা ভামাকো শহরে আমাদের ওপর ও অন্য ঘাঁটিগুলেতে আকাশ থেকে হামলা ও গোলা নিক্ষেপ করেছে।
পিডিএফের একজন সদস্য বলেন, আমরা কমপক্ষে ৪০ জন সেনা সদস্যকে হত্যা করেছি। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছি কমপক্ষে ২০০ অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম। কাচিন মিডিয়ায় একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, শাসকগোষ্ঠী বিরোধী বাহিনী ওই ব্যাটালিয়নের ভিতরে অবস্থান করছেন। তারা সেখানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র নিজেদের দখলে নিয়েছেন।
ভামো জেলায় লাইজা’কে সংযুক্ত করে একটি সড়কের পাশে ২০০৫ সালে ৪০০ হেক্টর জমির ওপর প্রতিষ্ঠা করা হয় ব্যাটালিয়ন ২৩৭ সদর দফতর (হেডকোয়ার্টার)। এর আগে ৮ই মার্চ কেআইএ এবং এর মিত্ররা দাওথপোনিয়ান শহরে ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন ১৪২-এর সদরদফতর দখল করে। সেখানে ব্যাপক যুদ্ধ হয় সামরিক জান্তার সেনাদের সঙ্গে। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী সাদা পতাকা উড়ায়। এই ব্যাটালিয়নে ছিলেন কমপক্ষে ১০০ সেনা সদস্য।
গণঅসন্তোষ আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন সেনাবাহিনীর সাবেক ক্যাপ্টেন ইউ হতেত মায়াত। তিনি বলেন, ব্যাটালিয়ান ২৩৭ এর পতন এটাই বলে দেয় যে, সামরিক জান্তা ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে। তিনি আরও বলেন, ভামোতে এটা হলো ২১তম মিলিটারি অপারেশন্স কমান্ডের একটি শাখা। তারপরও বিভিন্ন স্থানে হামলা অব্যাহত রেখেছে কেআইএ। শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ মূল্যবান শহর এখন কেআইএ’র হাতে।