আদরের সন্তান হারানোর ৩৩বৎসর অতিবাহিত
শফিউল আলম:: আমার ৭ বৎসর বয়সের ২য় পুত্র মহিউদ্দিন ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল বিকালে আমার সাথে বাড়ী থেকে রাউজানের রমজান আলীর হাটে গিয়ে ঘুরে আসে । ঘরে এসে আমি আসর ও মাগরিব নামাজ আদায় করার সময়ে আমার পাশে দাড়িয়ে নামাজ পড়ে । রাতে প্রলয়ংকারী ঘুর্নিঝড় শুরু হলে আমি আমার বাড়ী রাউজানের মোহাম্মদপুর হাড়ী চান্দ কাজীর বাড়ীর ঘর থেকে বের হয়ে প্রতিবেশীদের ঘর বিধস্ত হওয়ার দৃশ্য দেখছিলাম । এই সময়ে আমার পুত্র আমার ঘরে ঘুমিয়ে ছিল । হঠাৎ আমার মাতা মরহুমা দেলোয়ারা খাতুনের কান্নার শব্দ শুনে আমি ঘরে ফিরে যায় । আমার মাতা মরহুমা দেলোয়ারা খাতুন আমকে জড়িয়ে ধরে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন তুমি মানুষের সহায়তা করতে ঘর থেকে বের হয়েছে । তোমার ঘরের মধ্যে তোমার সন্তান ঘরের চাপায় চিরবিদায় নিয়েছে । গভীর রাতে ঘুর্নিঝড়ের তান্ডব চলছিল সেই সময়ে আমার মাতা মরহুমা দেলোয়ারা খাতুন সহ পরিবারের সকলেই আমার প্রিয় পুত্র মহিউদ্দিনের লাশঁ সামনে রেখে কান্নায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়ি । রাত শেষে ৩০ এপ্রিল সকালে বাড়ীঘর বিধস্ত বাড়ীর সামনের হাফেজ বজলুর রহমান সড়কের উপর মানুষের বসতঘর, গাছে ভেঙ্গে পড়ে থাকায় সড়ক দিয়ে কোন যানবাহন চলাচল করছেনা । ঐ সময়ে পুত্র হারানো বেদনায় আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যরা হতবাক হয়ে পড়ে । সকাল ১১ টার সময়ে বাড়ীর পাশে রাউজান মুহাম্মদপুর মহিউল উলুম মার্দ্রাসা সংগ্লন্ন ঈদগাহ মাঠে মহিউদ্দিনের জানাজার নামাজ আদায় করার পর মহিউদ্দিনের লাশ মার্দ্রাসা সংগ্লন্ন আমার পারিবিারিক কবরস্থানে দাফন করে এলাকার লোকজন । ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল প্রলয়ংকারী ঘুর্নিঝড়ের ঘটনায় এখনো আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের কাছে শোকের একটি দিন । এই দিনে পরিবারের সকলেকে আবারো মহিউদ্দিনের মৃত্যুর ঘটনায় কাদাঁয় । আমার প্রিয় পুত্র মহিউদ্দিন ঘুনিঝড়ে মৃত্যুর ঘটনার পর আমি আমার পৈতৃক নিবাস রাউজানের মোহাম্মদপুরের বাড়ী থেকে চলে এসে রাউজানের ডাবুয়া ইউনিয়নের দক্ষিন হিংগলা শান্তি নগর এলাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছি । প্রিয় পুত্র মহিউদ্দিনের হারানো আমার পৈতৃক ঘরে আমি কখনো বসবাস করেনি ।
ভয়াল থাবার সেই ক্ষত কোনোদিন শুকাবে না
সংবাদটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন
একটি মন্তব্য করুন