মোঃ নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই (রাঙামাটি)।
কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন বাজারে আম্রপালিতে সয়লাব হয়ে গেছে। দামও রয়েছে সহনীয় পর্যায়ে। পাহাড়ি এলাকায় উৎপাদিত আম্রপালি জাতের এই আমের ব্যাপক চাহিদা ও কদর রয়েছে দেশজুড়ে। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও উপজেলায় এই আমের ভাল ফলন হয়েছে। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে আম্রপালির চাষ করা হয়েছে। বিশেষ করে কাপ্তাইয়ের বড়ইছড়ি-ঘাগড়া সড়কের পাশের পাহাড়ি বাগানে গাছে গাছে দেখা মিলছে এই আমের সমারোহ। ইতিমধ্যে গাছ থেকে আম্রপালি সংগ্রহ করে বাজারজাত করছেন চাষীরা। ফলে কাপ্তাইয়ের বিভিন্ন হাট বাজারে আম্রপালিতে সয়লাব হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি কাপ্তাই উপজেলা সদর বড়ইছড়ি, নতুন বাজার, জেটিঘাট সহ বেশ কিছু জায়গায় দেখা গেছে, আম্রপালির ব্যাপক বিকিকিনি। তবে আম্রপালির পাশাপাশি কাপ্তাইয়ে রুপালী, রাঙ্গুই এবং মল্লিকা জাতের আমের ফলনও হয়েছে মোটামুটি। দীর্ঘদিন আম্রপালি আমের চাষ করছেন উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা সুজন তঞ্চঙ্গ্যা, যতিন্দ্র তঞ্চঙ্গ্যা সহ অনেক চাষী। তারা জানায়, প্রতিবছরের মতো এবারও আম্রপালির ফলন ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যে তাদের বাগানগুলো পাইকার ক্রেতারা কিনেও ফেলেছেন। এখন চলছে বাজারজাত করণের প্রক্রিয়া। এদিকে, কাপ্তাই উপজেলা সদরের মৌসুমি ফল বিক্রেতা মোঃ দুলাল মিয়া, আবু তালেব সহ একাধিক বিক্রেতা জানান, তারা উপজেলায় মৌসুমী ফলের ব্যবসা করে সংসার চালায়। মৌসুমী ফলের মধ্যে আম্রপালি বিক্রয় করেই সবচেয়ে বেশি আয় করেন তারা। কারণ কাপ্তাইয়ের আম্রপালি সারাদেশে বেশ জনপ্রিয়। বছরের জুন, জুলাই মাসে প্রচুর আম্রপালি কাপ্তাই থেকে জেলার বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। এবারও কাপ্তাইয়ে আম্রপালির ফলন ভাল হওয়ায় তারা অনেক আম সংগ্রহ করেছেন বিক্রয়ের জন্য। ব্যবসায়ীদের একটি সূত্র জানায়, পাইকার ব্যবসায়ীরা বাগান মালিকদের কাছ থেকে প্রতিকেজি আম ৫০-৬০ টাকা দরে ক্রয় করে এসব আম ৯০-১০০ টাকা বা তারও বেশি দামে বিক্রয় করছেন। আবার কয়েকজন বিক্রেতা জানান, গত বছরের তুলনায় দাম কম হওয়ায় তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। গতবছর যেখানে প্রতিকেজি আম্রপালি ১শ’ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এবার একই জাতের দাম ৬০-৭০ টাকায় বিক্রয় করছেন। আবার যেসব আমের দাম ৫০ টাকা ছিল এবার তা ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি করছে তারা। অত্যন্ত সু-স্বাদু হওয়ায় আম্রপালির চাহিদা ক্রেতাদের কাছে সবচেয়ে বেশী বলে এই ব্যবসায়ীরা জানায়। কাপ্তাই উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ ইমরান আহমেদ জানান, গতবছরে তুলনায় এবার কাপ্তাইয়ে আম্রপালির ভাল ফলন হয়েছে। কাপ্তাইয়ের ৫টি ইউনিয়নে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে আম্রপালির চাষ হয়েছে। সারাদেশ জুড়ে এই আমের বেশ চাহিদা ও কদর রয়েছে। কাপ্তাইয়ের এসব আম্রপালি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও বিক্রি হয়ে থাকে। আশা করা যাচ্ছে, এবারও স্থানীয় আম চাষীরাও বেশ লাভবান হবে।