কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে সবশেষ শেখ হাসিনার পদত্যাগের একদফা দাবিতে জুলাই-আগস্টে দেশজুড়ে আন্দোলনে ৮৭৫ জন নিহত হয়েছে বলে একটি মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে ৪২২ জন বিএনপির নেতাকর্মী বা সমর্থক বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই আন্দোলন হঠাৎ করে গড়ে ওঠেনি। এটি বহু বছরের নির্যাতন, নিপীড়ন ও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বিএনপির দীর্ঘদিনের নিরবচ্ছিন্ন পরিক্রমা। এখানে বিএনপির অবদান খাটো করার কোনো অবকাশ নেই।’
এ সময় আন্দোলনের কৃতিত্ব নয়, স্বৈরাচার পতন নিশ্চিত করাই বিএনপির লক্ষ্য ছিল বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ফখরুল বলেন, ‘এ বিজয়ের পেছনে রয়েছে অসংখ্য নির্যাতিত মানুষের বেদনার অপ্রকাশিত ইতিহাস, গুম হওয়া ছেলের ফেরার প্রতীক্ষায় ব্যাথাতুর মায়ের ডাক, স্বামী হারানো বেদনাবিধূর স্ত্রীর অনন্ত আর্তনাদ, পঙ্গু বাবার জন্য সন্তানের হৃদয়বিদারক হাহাকার, আর কারাগারে বন্দী ভাইয়ের জন্য বোনের নীরব প্রার্থনা। তাদের সবার ১৬ বছরের রক্ত, শ্রম ও অশ্রু দিয়ে, প্রতিটি পরিবারের ক্ষোভ, ক্রোধ ও অব্যক্ত বিস্ফোরণ বুকে ধারণ করে; চলমান ছিল শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই। বস্তুত ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ৪২২ জন, ২০২৩ সাল পর্যন্ত শহীদ এক হাজার ৫৫১ জন, গুম ৪২৩ জন (সকল রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ মিলিয়ে প্রায় ৭০০ জন), আসামি ৬০ লাখ এবং মামলা দেড় লাখ। এসব কেবল বিএনপির ত্যাগের পরিসংখ্যানই নয়, বরং বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের পথে দলটির অবিচল সংগ্রাম ও অবদানের প্রতিফলন।’
সংবাদ সম্মেলনে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাউদ্দিন আহমেদসহ দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।