যৌন কেলেঙ্কারি কিছুতেই ছাড়ছে না অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টকে। এবার আরও একজন নারী এমপি ও সাবেক মন্ত্রী এমন অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, একজন পুরুষ সহকর্মী তাকে যৌন হয়রান করেছেন পার্লামেন্টের ভিতরে। অভিযোগকারী মন্ত্রিপরিষদের সাবেক সদস্য ক্যারেন অ্যানড্রু। অভিযোগে বলেছেন, ওই পুরুষ সহকর্মী তার কাঁধে উত্তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলেছেন। পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে অশোভন মন্তব্য করেছেন। তবে ওই পুরুষ সহকর্মীর নাম প্রকাশ করেননি তিনি। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
পার্লামেন্টের ভিতর যৌন হয়রানির এমন অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে। এ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। তদন্ত হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত ফেব্রুয়ারিতে এমপি এবং স্টাফদের জন্য নতুন আচরণবিধি তৈরিতে সম্মত হয়েছে পার্লামেন্টের উভয়কক্ষ। এবিসি’কে মিস অ্যানড্রু বলেছেন, আমি শুধু আমার নিজের কাজের কথা মাথায় রেখে বসে থাকতাম। এ সময় আমার কাঁধের পিছন দিকে নিঃশ্বাস টের পেতাম। আমি যদি এ নিয়ে একটি প্রশ্ন করি, তাহলে তা হবে একটি জোরালো প্রশ্ন- এ বিষয়ে জোর দিন এবং অনুসন্ধান করুন। কিন্তু ইস্যুটি কি আপনি জানেন? অনেক মানুষ আছেন। তারা বলবেন- তুমি মজা করতে জানো না।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সাবেক জোট সরকারের একজন সিনিয়র নারী সদস্য ছিলেন মিস অ্যানড্রু। তিনি একই সঙ্গে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয় সামলেছেন। ফেডারেল রাজনীতিতে নারীদের সঙ্গে যে দুর্ব্যবহার করা হয় তা নিয়ে তিনি বার বার কথা বলেছেন। এ বছরের শুরুর দিকে তিনি ঘোষণা করেছেন আগামী নির্বাচনে তিনি রাজনীতি থেকে অবসরে যাবেন। আগামী নির্বাচন হওয়ার কথা ২০২৫ সালে।
মিস অ্যানড্রু একজন সাবেক মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি রাজনীতির আগের ক্যারিয়ারটা কাটিয়েছেন পুরুষপ্রধান কারখানায়। তিনি বলেছেন, শুধু পার্লামেন্টে তিনি লিঙ্গগত বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। অ্যানড্রু বলেন, রাজনীতিতে এলাম। এরপরই প্রথমবার মনে হলো আমি একজন নারী বলে আমাকে লড়াই করতে হবে। এ বছরের শুরুর দিকে মিস অ্যানড্রুর তখনকার লিবারেল পার্টির সহকর্মী সিনেটর ডেভিড ভ্যান যৌন হয়রানির তিনটি অভিযোগের মুখোমুখি হন। তার মধ্যে দু’জন অভিযোগকারী হলেন এমপি লিদিয়া থর্প এবং আমান্ডা স্টোকার।
এমন অভিযোগ উঠার পর তা পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেন ডেভিড ভ্যান। তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এই অভিযোগের ফলে সরকারি কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়। নারীদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টকে যেন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অক্টোপাসের মতো ঘিরে ধরেছে। ২০২১ সালে লিবারেল পার্টির সাবেক স্টাফার ব্রিটানি হিগিন্স প্রকাশ্যে অভিযোগ করেন যে, প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরে তাকে ২০১৯ সালে ধর্ষণ করেছেন একজন সহকর্মী।


