চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও চসিক মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর ঘোষিত ৭ লাখ ৬২ হাজার কোটি টাকার বাজেট শুনতে ভালো লাগছে, কিন্তু যেসব খাত থেকে বাজেট পূরণ করার কথা বলা হচ্ছে, সেটা চ্যালেঞ্জিং। এটা একটা অসম বাজেট। এত বড় ঘাটতি বাজেট দিয়ে স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব নয়। এটি একেবারেই অবাস্তবায়নযোগ্য একটি কল্পনা প্রসূত বাজেট। বর্তমানে অসহনীয় দ্রব্যমূল্য উর্দ্ধ গতির কারণে সাধারণ মানুষ এমনিতেই দিশেহারা এর উপর ভ্যাট ও কর দেওয়া তাদের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়বে। মানুষের মাঝে স্বস্তি ফেরার আগে আরও বড় অস্বস্তি নিয়ে এসেছে এ বাজেট। এটা করের বোঝা ছাপিয়ে জনগণের সর্বস্ব লুটে নেয়ার বাজেট। এই বাজেট মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য।
তিনি বৃহস্পতিবার (১ জুন) সংসদে অর্থমন্ত্রীর ঘোষিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এসব মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, এই বাজেটের আকার হচ্ছে ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ আগামী অর্থবছরের জন্য আয় হিসাব করা হচ্ছে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হচ্ছে ২ লাখ ৬১ হাজার ৮৫ কোটি টাকা। আমদানি, রপ্তানি, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান প্রভৃতি সামষ্টিক অর্থনীতির সূচকগুলো আলোচনা করলেই স্পষ্ট যে, প্রবৃদ্ধি অর্জন নিতান্তই কল্পনাপ্রসূত। যা কঠিন এবং অসম্ভব। জিডিপি ও রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে, তা দৃশ্যমানভাবেই প্রতারণার শামিল।
তিনি বলেন, সরকারের ব্যর্থতার কারণে এমনিতেই দেশের অর্থনীতি নানামুখী চাপে। ডলারের সংকট এখনো প্রকট। পণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে গেলে কোনো কোনো ব্যাংক ফিরিয়ে দিচ্ছে। আবার রপ্তানি আয় তুলতে গেলেও সহজে দিচ্ছে না। চাল, ডাল, লবণ, ভোজ্যতেল, চিনিসহ প্রায় প্রতিটি জিনিসেরই দাম বাড়তি। গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল ও সারের দাম কয়েক মাস আগেই বাড়ানো হয়েছে। কমেছে ডলারের তুলনায় টাকার মান। প্রণোদনা দিয়েও প্রবাসী আয় টানতে পারেনি সরকার। রপ্তানি আয়ের প্রবণতাও কমতির দিকে। আর আছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নানা ধরনের শর্ত পূরণের চাপ।
তিনি বলেন, বেশি ব্যাংক ঋণ নিয়ে সরকার মূল্যস্ফীতি কে উস্কে দিচ্ছে। এখন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, মুদ্রা বিনিময় হার স্থিতিশীল করা, আয়বৈষম্য রোধ করা এবং রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধি করাই হচ্ছে বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ।
তিনি বলেন, আজকে যে বাজেট পাস হলো, সেটি গণবিরোধী, জীবনযাত্রার মানকে নিম্নমুখী করা, মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিসহ মানব উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা ও জনগণের পকেট কাটার বাজেট। আমরা এ প্রতিক্রিয়াশীল বাজেটের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।