আফগানিস্তানের কাছে প্রথমবার ২-১ ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের সেই আক্ষেপ নিয়ে টাইগাররা পৌঁছেছে সিলেটে। সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে সেই আক্ষেপ মেটানোর একটি দারুণ সুযোগ স্বাগতিকদের সামনে। দুই ম্যাচের এই সিরিজে লড়াইয়ে নিজেদের প্রমাণ করতে মরিয়া টাইগাররা। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে প্রথম টি-টোয়েন্টি। যদিও আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে বেশ পিছিয়ে বাংলাদেশ। মুখোমুখি ৯ ম্যাচে মাত্র ৩টিতে জয় পেয়েছে টাইগাররা। ক্রিকেটের এই সীমিত ওভারের ফরম্যাটে এখনো পায়ের তলায় মাটি খুঁজে পায়নি টাইগাররা। তবে সাকিব সফরকারীদের শক্তি নিয়ে সতর্ক হলেও জয় পেতে ভীষণ আত্মবিশ্বাসীও। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তান কঠিন প্রতিপক্ষ এবং ভিন্ন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিবে।
আমাদের মনে রাখতে হবে টি-টোয়েন্টিতে বড় বা ছোট দল বলে কিছু নেই। আমরা ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছি। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের কাছে একটি ম্যাচ হেরেছি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই সিরিজের দু’টি ম্যাচই জিততে চাই এবং এই ফরম্যাটে আমাদের জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।’
সাকিবের এই আত্মবিশ্বাসের কারণও আছে। সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের পর ছয় ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে তিন ম্যাচের সিরিজে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের নজিরও আছে টাইগারদের। এই ফরম্যাটে সবচেয়ে বেশি দুর্বল বলে বিবেচিত বাংলাদেশ উন্নতি করছে এটাও অস্বীকার করার নয়। আফগানদের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত দুটি টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলেছে স্বাগতিকরা। এর মধ্যে সাকিবের নেতৃত্বে ২০১৮ তে হোয়াটওয়াশও হয় বাংলাদেশ। তবে ২০২২ এ সবশেষ ১-১ এ সিরিজ ড্র করে। শেষ পাঁচ লড়াইয়ের মধ্যে দু’টি জয় পায় বাংলাদেশ। আফগানদের বিপক্ষে মোট তিনটি জয়ের মধ্যে দু’টিই সাম্প্রতিক সময়ে পেয়েছে টাইগাররা। এ সব পরিসংখ্যান মাথায় রেখে সাকিব বলেন, ‘এই ফরম্যাটে আমরা উন্নতি করছি, যা আমাদের সাম্প্রতিক পারফরমেন্সে ফুটে উঠেছে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আমরা কিছু ম্যাচ জিতেছি। আমরা সেই ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।’
ওয়ানডে সিরিজে আফগানিস্তানের পেসার ফজলহক ফারুকি এবং দুই স্পিনার রশিদ খান ও মুজিব উর রহমানের বিপক্ষে খেলতে হিমশিম খেয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। মূলত এই তিন বোলারই ম্যাচের গতিপথ ঠিক করে দিয়েছেন। বিশেষ করে রশিদকে খেলতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হয়েছে টাইগার ব্যাটাররা। শেষ ওয়ানডেতে আফগানদের এই সেরা স্পিনার ছিলেন বিশ্রামে। এবার তিনি টি-টোয়েন্টিতে ফিরছেন মাঠে। তবে রশিদের ফিরে আসায় চিন্তিত নন সাকিব। তিনি সফরকারীদের একজন নয় গোটা দল নিয়ে ভাবছেন বলে জানান। সাকিব জানান, কোনও নির্দিষ্ট খেলোয়াড়কে নিয়ে খুব বেশি ভাবছেন না। সেরা পারফরমেন্স দিয়ে নিজেদের মেলে ধরতে চান। সাকিব বলেন, ‘প্রতিপক্ষ, কোনও নির্দিষ্ট খেলোয়াড় বা কন্ডিশন নিয়ে বেশি ভাবলে আমরা ভালো খেলতে পারবো না। কিভাবে ভালো পারফরমেন্স করা যায় সেটি নিয়েই খেলোয়াড়রা ভাবছে বলেই আমার বিশ্বাস। কোনও খেলোয়াড় বা প্রতিপক্ষ নিয়ে বেশি ভাবছে না তারা।’
চট্টগ্রামে প্রথম ওয়ানডেতে বৃষ্টি আইনে হারে বাংলাদেশ। পরের ম্যাচে হারে ১৪২ রানের বড় ব্যবধানে। দুটি ম্যাচেই টাইগারদের বোলিং ব্যাটিং ছিল একেবারেই খাপ ছাড়া। তবে শেষ ম্যাচে আফগানদের ১২৬ রানে অলআউট করে বোলিংয়ে ফের দাপটে ফিরেছে টাইগাররা। আর ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে ব্যাটিংয়েও খুঁজে পেয়েছে আত্মবিশ্বাস। ওপেনার লিটন দাস এই ম্যাচে ফিফটি হাঁকিয়ে রানে ফিরেছেন। বলার অপেক্ষা রাখে না টি-টোয়েন্টিতে সেই আত্মবিশ্বাস তাকে এগিয়ে রাখবে। তার সঙ্গে ওপেনিংয়ে জুটি বাঁধবেন রনি তালুকদার। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব, তাওহীদ হৃদয়রা দলের ব্যাটিংয়ে হাল ধরবেন। ওয়ানডে সিরিজে ব্যর্থ আফিফ হোসেনকেও সুযোগ দেয়া হতে পারে একাদশে। পেস আক্রমণে তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলামের খেলার সম্ভাবনা। স্পিনে সাকিবের সঙ্গী হতে পারেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাসুম আহমেদ।
সিলেটে বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। টি-টোয়েন্টি সিরিজের দু’টি ম্যাচই বৃষ্টির কবলে পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি।


