প্রায় ১৭ বছর পর ঢাকা-নারিতা রুটে আবারও সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করতে যাচ্ছে রাষ্ট্রীয় সংস্থা বিমান। শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে নারিতার উদ্দেশে উড়াল দেবে বিমানের বোয়িং সেভেন এইট সেভেন।
৫০ বছরের দীর্ঘ কূটনৈতিক সম্পর্কের বন্ধন উচ্চমাত্রায় পৌঁছেছে বাংলাদেশে ও জাপানের। অর্থ-বাণিজ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করে আসছে জাপান। পাশাপাশি অর্থ-বাণিজ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে চলেছে দেশটি।
এ ছাড়া দেশটি বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করে চলেছে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, মেট্রোরেল, শাহজালাল বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের মতো বড় বড় নির্মাণ প্রকল্প। এমনকি উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকায়ও উঠে এসেছে জাপান। নানাবিধ কর্মকাণ্ডে যাতায়াত বাড়লেও দুই দেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয় উভয় দেশে যাত্রীদের।
এমন প্রেক্ষাপটে প্রায় দেড় যুগ পর আবারও টোকিওর আকাশে সরাসরি ডানা মেলার অপেক্ষায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। প্রস্তুতি শেষ ১ সেপ্টেম্বর থেকে সরাসরি দেশটির নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনা করবে রাষ্ট্রীয় এ বিমান সংস্থা।
কাজেই যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে জানান বিমান প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। তিনি বলেন,
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা হচ্ছে আমাদের দেশের বিমানগুলো যেন উন্নত বিশ্বের দেশগুলোয় যায়। এই লক্ষ্যেই আমরা ঢাকা-নারিতা রুটের ফ্লাইট চালু করতে যাচ্ছি, যা প্রধানমন্ত্রীর একটি প্রতিশ্রুতি ছিল। সব হিসাব-নিকাশ শেষে আমরা আমাদের পরিকল্পনা তৈরি করেছি। এই রুটে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট পরিচালিত হবে।
যাত্রীসংখ্যা বাড়ায় ফ্লাইট পরিচালনা লাভজনক হবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের বহু সংখ্যক লোক জাপানে কাজ করেন। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যকার সম্পর্ক রক্ষায় বিমান একটি সেতু হিসেবে কাজ করবে। জাপানি বহু ইঞ্জিনিয়ার ও বহু কনসালট্যান্ট বাংলাদেশে কাজ করছেন। বিশেষ করে থার্ড টার্মিনালসহ অন্যান্য জায়গায়। সুতরাং, তাদের জন্য এই রুটটি ব্যবহার করা বেশ সুবিধাজনক হবে।’
ঢাকা থেকে নারিতা রুটের সর্বনিম্ন একমুখী ভাড়া শুরু হবে ৭০ হাজার ৮২৮ টাকা থেকে এবং ফিরতি টিকিটসহ সর্বনিম্ন মূল্য জনপ্রতি ১ লাখ ১১ হাজার ৬৫৬ টাকা।
বিমান সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম বলেন,
ভালো খবর হচ্ছে, তারা ঢাকা-নারিতা রুটে সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। আমি মনে করি, এটি একটি বুদ্ধিমান সিদ্ধান্ত। এটি কার্যকরভাবে করতে পারলে ভালো হবে। বিশেষ করে আমাদের দেশে প্রচুর জাপানি বিনিয়োগ আসছে। প্রচুর জাপানি বাংলাদেশে থাকেন। সেই সঙ্গে জাপানেও প্রচুর বাঙালি থাকেন। তারা সেখানে কাজ করছেন পাশাপাশি প্রচুর শিক্ষার্থী জাপানে পড়াশোনা করতে যাচ্ছেন। তা ছাড়া চিকিৎসা নিতেও বাংলাদেশ থেকে অনেকে যাচ্ছে। কাজেই জাপানে এরই মধ্যেই আমাদের একটি বাজার তৈরি হয়েছে।
সপ্তাহে তিন দিন বিমানের ফ্লাইট ঢাকা থেকে নারিতার লক্ষ্যে ছেড়ে যাবে শুক্রবার, সোমবার ও বুধবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে। এদিকে নারিতা থেকে ঢাকার উদ্দেশে ফিরতি ফ্লাইট ছাড়বে প্রতি শনি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টায়।
এর আগে লাভজনক রুট না হওয়ায় সর্বশেষ ২০০৬ সালে বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল ঢাকা-নারিতা সরাসরি ফ্লাইট।