প্রায় মধ্যরাত। অনেক মানুষ তখন গভীর ঘুমে। কিছু বুঝে উঠার আগেই বাড়িঘর ভেঙে পড়ে। তার নিচে চাপা পড়ে নিহত হন কমপক্ষে ১২৮ জন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৫০ জন। শুক্রবার দিবাগত রাতে শক্তিশালী ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে আবার ধ্বংসস্তূপ সেই নেপাল। যেখানে এর আগে ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছিলেন। ন্যাশনাল আর্থকোয়াক মনিটরিং অ্যান্ড রিসার্স সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে এই ভূমিকম্প তছনছ করে দেয় নেপালের পশ্চিমাঞ্চল। এর উৎস ছিল জাজারকোট জেলায়। এ তথ্য দিয়েছে অনলাইন কাঠমান্ডু পোস্ট।
ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জাজারকোট এবং পশ্চিম রুকুম।
জাজারকোট পুলিশের ডেপুটি সুপরিনটেন্ডেন্ট সন্তোষ রোকা বলেছেন, শুধু জাজারকোটে নিহত হয়েছেন ৯২ জন। নিহতদের মধ্যে আছেন নালগাদ মিউনিসিপালিটির ডেপুটি মেয়র সারিতা সিং। কারনালি প্রদেশ পুলিশের তথ্যমতে, সেখানে বারেকোট রুরাল মিউনিসিপালিটির রামিদান্দা জেলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৪৪ জন। আহত হয়েছেন ৭০ জন। জাজারকোটে আহত কমপক্ষে ৫৫ জনের অবস্থা স্থিতিশীল। তার মধ্যে ৫ জনকে নেয়া হয়েছে সুরখেতে অবস্থিত কারনালি প্রভিন্স হাসপাতালে। অন্যদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
পশ্চিম রুকুমের ডিএসপি নামারাজ ভট্টরাই বলেছেন, সেখানে কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। আথবিসেকোট মিউনিসিপ্যালিটিতে নিহত হয়েছেন ৩৬ জন। সানিভেরি রুরাল মিউনিসিপ্যালিটিতে নিহত হয়েছেন ৮ জন। জেলার মুখ্য কর্মকর্তা সুরেশ সুনার বলেছেন, ভূমিকম্প সবচেয়ে জোরালোভাবে আঘাত করেছে জাজারকোট জেলার ভেরি, নালগাদ, কুশে, বারেকোট এবং ছেদাগাদে। অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে নামানো হয়েছে জেলার সব নিরাপত্তা রক্ষীকে।
এর আগে ২২শে অক্টোবর ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে কাঠমান্ডু ভ্যালি ও আশপাশের জেলাগুলোতে। তবে সে সময় কোনো প্রাণহানী বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, তিব্বতীয় ও ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটের মিলস্থলে অবস্থিত নেপাল। এই প্লেট প্রতি শতাব্দীতে দুই মিটার করে একে অন্যের দিকে অগ্রসর হয়। তা থেকে যে শক্তি নির্গত হয় তা ভূমিকম্প হিসেবে আঘাত হরে। এ জন্য নেপালে ভূমিকম্প একটি সাধারণ বিষয়। এর আগে ২০১৫ সালে প্রলয় সৃষ্টি করে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প। তাতে কমপক্ষে ৯০০০ মানুষ নিহত হন। নেপালের পোস্ট-ডিজঅ্যাস্টার অ্যাসেসমেন্টের রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বে ১১তম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হলো নেপাল।
ওদিকে অবিলম্বে উদ্ধার ও ত্রাণকাজের জন্য নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ড। অভিযানে নামানো হয়েছে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর তিনটি এজেন্সিকে। প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে এক্সে দেয়া পোস্টে বলা হয়েছে, প্রাণহানী এবং জানমালের ক্ষয়ক্ষতিতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ড।


