কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসকের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও দোষীদের দ্রুত বিচার এবং চিকিৎসকদের কর্মস্থলে স্থায়ী নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে চিকিৎসকরা। এসময় একইসঙ্গে বিক্ষোভ করে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক, শিক্ষার্থী, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও।
আজ বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে তারা হাসপাতাল থেকে মানববন্ধন করে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে এসে কিছুক্ষণ অবস্থান নেয়। তারপর হাসপাতালে গিয়ে তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে।
এসময় ইন্টার্ন চিকিৎসক শাহ তালাল মাহমুদ দিহান বলেন, আমাদের চিকিৎসককে অন্যায়ভাবে মারধর করা হয়েছে। হাসপাতাল ভাঙচুর করা হয়েছে। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো মামলা করেনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে আজকের মধ্যেই মামলা দায়ের করতে হবে। এছাড়া চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে আমরা হাসপাতালে ফিরব না।
পরে তত্ত্বাবধায়ক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করার এক পর্যায়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মং টিং ঞো শিক্ষার্থীদের দাবি শুনেন। পরে সাংবাদিকদের জানান, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের ভাঙচুর নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তথ্য সংগ্রহ করে আজকের মধ্যেই মামলা করবেন। এছাড়া চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে শুধুমাত্র জরুরি বিভাগ ছাড়া আর কোথাও চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে না।
এদিকে, বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১টায় হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মারধরের শিকার হন ডা. সজীব কাজী নামের এক চিকিৎসক। হামলার শিকার সজীব হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ও সিসিইউতে কর্মরত ছিলেন।
হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রোগীর মৃত্যুর পর স্বজনরা সিসিইউতে প্রবেশ করে প্রথমে চিকিৎসকের কক্ষ ভাঙচুর চালায়। পরে চিকিৎসক সজীবকে মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে তাকে টেনে-হিঁচড়ে মারতে মারতে চারতলা থেকে নিচে নামিয়েও মারধর করতে থাকে।
এসময় হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে অন্য চিকিৎসকরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন। এরপর হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্তদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবিতে জরুরি বিভাগসহ সরকারি হাসপাতালটি কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করে চিকিৎসকরা।
এদিকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে আহত চিকিৎসক ডা. সজীব কাজী কক্সবাজার সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার রহমত উল্লাহ।