কক্সবাজারে নিরাপত্তার দায়িত্বে ২০০ ট্যুরিস্ট পুলিশ আছেন মন্তব্য করে ট্যুরিস্ট পুলিশের বিশেষ পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা বলেন, ট্যুরিস্ট বা পর্যটককে নিরাপত্তা না দিলে পর্যটন শিল্পে ভাটা পড়বে। তাই ট্যুরিস্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
আজ মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত ১১তম এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বদরুল আলম মোল্লা বলেন, ‘২০০ ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারে নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন। ভ্রমণের আগে বা পরে আপনারা আমাদের অবগত করলে আমরা আপনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করতে পারবো।’
তিনি বলেন, ‘এবার আমরা অনেক কম ট্যুরিস্ট পেয়েছি। ট্যুরিস্টকে নিরাপত্তা না দিলে পর্যটন শিল্পে ভাটা পড়বে। তাই ট্যুরিস্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে তারা দেশের বাহিরে ঘুরতে না গিয়ে নিজ দেশেই ভ্রমণে উৎসাহী হবেন।’
পর্যটন শিল্পের গতি বাড়াতে ট্যুরিস্ট পুলিশ দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বদা সচেষ্ট থাকবে উল্লেখ করে বদরুল আলম বলেন, পর্যটন শিল্প যে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে তা নতুন বাংলাদেশে এই ট্যুরিজম ফেয়ারের মাধ্যমে আবার ঘুরে দাঁড়াবে বলে আমার বিশ্বাস।’
এসময় পর্যটন বিচিত্রার সম্পাদক ও এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হেলাল ট্যুরিজম ফেয়ার সম্পর্কে বলেন, বৈচিত্র্যময় বাংলাদেশ হতে পারে বিশ্বের কাছে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। তাই বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে দ্রুত গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে আগামী ১৯ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় অনুষ্ঠিত হবে ১১তম এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার।
ট্যুরিজমের চাকা সচল রাখার জন্য আমাদের সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে মন্তব্য করে মহিউদ্দিন হেলাল বলেন, ট্যুরিজম সেক্টরে একটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে, সেই অনিশ্চয়তার দ্বার এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার কিছুটা হলেও উন্মুক্ত করবে। তাই ট্যুরিজম সেক্টরে যে সাময়িক স্থবিরতা দেখা দিয়েছে তা থেকে উত্তরনে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মেলবন্ধন তৈরি করতে চাচ্ছি। এতে করে পর্যটন শিল্পের স্থবির অবস্থা এই মেলার মাধ্যমে খুলে দেয়া সম্ভব। স্পেশাল ডিস্কাউন্ট অফারের মাধ্যমে পর্যটকদের আকর্ষণ করতে হবে। তাহলে তারা ভ্রমণে উৎসাহী হবে। মানুষ যত ভ্রমণ করবে তত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে।
মহিউদ্দিন বলেন, ট্যুরিজম রিলেটেড বিষয় নিয়ে ১১ হাজার শিক্ষার্থী বাংলাদেশে পড়াশোনা করছে। তারাও এইখানে আসবে। তাদের জন্য মেলায় ভ্রমণে আমরা কোনো ফি নিচ্ছি না। তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মেলা ভ্রমণের জন্য।
তিনি বলেন, বিদেশিরা জানতে চাচ্ছে আমাদের দেশের পরিস্থিতি কী? সেখানে এই ট্যুরিজম ফেয়ারের মাধ্যমে আমরা আমাদের দেশে ভ্রমণের নিরাপত্তার বার্তা দিতে পারব। পর্যটন শিল্পে গতি ফেরাতে বাংলাদেশের পর্যটন আকর্ষণকে দেশবিদেশের মানুষের কাছে আরও জনপ্রিয় করা এবং আঞ্চলিক পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সেতু বন্ধন করাই এই মেলা আয়োজনের অন্যতম উদ্দেশ্য।
পর্যটন একটি বহুমাত্রিক শিল্পে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে অগ্রাধিকার বিবেচনায় পর্যটন শিল্প একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অসীম সম্ভাবনাময় মাধ্যম। এজন্য দরকার যথাযথ পদক্ষেপ সমন্বিত সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ ও আন্তরিক প্রচেষ্টা।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সার্ভিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, বাংলাদেশ মালদ্বীপ হাই কমিশনের থার্ড সেক্রেটারি মিজ আশিথ শামলা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ১১তম এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার উদ্বোধনী দিনে বিকেল ৩ টায় শুরু হলেও অন্যদিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে। মেলার প্রবেশ মূল্য ৩০ টাকা। প্রবেশ কুপণের বিপরীতে র্যাফেল ড্র বিজয়ীদের জন্য থাকবে এয়ারলাইন্স টিকিটসহ বেড়ানোর আকর্ষণীয় গিফট ভাউচার।