জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতা নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। যদি এই গণঅভ্যুত্থান ব্যর্থ হতো তাহলে আমরা যারা আন্দোলনে ছিলাম, ছাত্র-জনতা যারা আন্দোলন করছে সবাইকে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ছেড়ে দিতেন না। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ না করেও আওয়ামী লীগ যেভাবে মুক্তিযুদ্ধের একক দাবিদার হয়ে বাংলাদেশকে বিভক্ত করেছিল, বর্তমানেও অনেকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিজের অবদান দাবি করে জাতীয় ঐক্যকে বিনষ্ট করছে। সবাইকে এই ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন। হাটহাজারী উপজেলায় এবি পার্টির উদ্যোগে আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ ও আহতদের স্মরণ ও আলোচনা সভায় এবি পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন এসব কথা বলেন।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) হাটহাজারী উপজেলায় এবি পার্টির উদ্যোগে আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ ও আহতদের স্মরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আপনাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র জনতার এই ত্যাগ আমার ভুলে যেতে পারি না। বাংলার আপামর জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে মাধ্যমে আমরা আহত ও নিহতদের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করবো। হাটহাজারীর কৃতিসন্তান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ফ্যাসিস্ট হাসিনা জেলের সাজা দিয়েছেন। আল্লাহর কি মর্জি তিনি তাকে বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্ব দিয়েছেন।
এসময় মঞ্জু চট্টগ্রাম-৫ অর্থাৎ বায়েজিদ একাংশ এবং হাটহাজারী আসনের জন্য এবি পার্টির পক্ষে লে. কর্ণেল অব. দিদারুল আলমকে পরিচয় করিয়ে দেন।
সভাপতির বক্তব্যে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক লে. কর্ণেল (অব) মো. দিদারুল আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এবি পার্টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আন্দোলন চলাকালে মিছিলে আমার আশেপাশে অনেকে গুলিবিদ্ধ হন। আমার পাশে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু গুলিবিদ্ধ হন। অবশেষে আমাদের দীর্ঘ লড়াই সফল হয়েছে এবং সরকারের পতন ঘটেছে। এখন আমাদের সামনে মূল লক্ষ্য একটি কল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠন করা, যেখানে সকল নাগরিকের জন্য সমান অধিকার, ন্যায়বিচার এবং মানবিক মর্যাদা নিশ্চিত করা হবে। এবি পার্টি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি, এই নতুন যাত্রায় আমরা একটি সমৃদ্ধ, শান্তিপূর্ণ এবং সমতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ উপহার দিতে পারব।
এবি পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক লে. কর্ণেল (অব) হেলাল উদ্দিন বলেন, আমরা বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও অনিরাপদ রাখবো না, ছাত্র জনতা, সেনাবাহিনী থাকতে বাংলাদেশে আর ফ্যাসিস্ট আমল ফিরে আসতে দেওয়া হবে না। আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশকে গড়ে তুলবো।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর এনায়েত উল্লাহ পাটোয়ারী বলেন, পত্রিকায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় আহতদের আহাজারি দেখতে আমাদের ভালো লাগে না। অবিলম্বে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এবি পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় সহকারী সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার লোকমান, চট্টগ্রাম মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক এবং কেন্দ্রীয় সহকারী সদস্য সচিব ছিদ্দিকুর রহমান, বিএনপি ফটিকছড়ি উপজেলার সভাপতি কর্ণেল অব. আজিমুল্লাহ বাহার, ছাত্র পক্ষের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মুহাম্মদ প্রিন্স, এবি পার্টির হাটহাজারী উপজেলার নেতা মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু, বোরহান উদ্দিন, ছাত্রনেতা আব্দুল কাদের, এবি পার্টির চট্টগ্রাম মহানগর যুগ্ম সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার যায়েদ হাসান চৌধুরী, শহিদুল ইসলাম বাবুল, সহকারী সদস্য সচিব আব্দুর রহমান মনির ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ সোহরাব হোসেন পিয়াস।