অবশেষে জয়ের মুখ দেখলো খুলনা টাইগার্স। টানা তিন হারের পর দলের সবচেয়ে বড় তারকা তামিম ইকবালের ব্যাটে প্রথম জয়ের দেখা পায় দলটি। তামিমও পেলেন এবারের বিপিএলে নিজের প্রথম হাফসেঞ্চুরি। ঘরের মাঠ চট্টগ্রামের সাগরিকায় গতকাল তার দল রংপুরকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে। এদিন দলের জয় নিশ্চিত করেই মাঠ ছাড়েন তামিম। ১৩০ রানের লক্ষ্যে দলের পক্ষে অর্ধেকেরও বেশি রান আসে তার ব্যাট থেকে। শেষ পর্যন্ত তামিম অপরাজিত ছিলেন ৪৭ বলে ৬০ রানে। তামিমকে যোগ্য সঙ্গ দেন মাহমুদুল হাসান জয়। ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছান তিনি। জয় অপরাজিত ছিলেন ৪২ বলে ৩৮ রানে।
খুলনার বোলাররাই অবশ্য কাজটা সহজ করে দিয়েছিলেন। দুই পাকিস্তানি ওয়াহাব রিয়াজ আর আমাদ ভাটের আগুনঝরা বোলিংয়ে পুরো ২০ ওভার খেলে ১২৯ রানে অলআউট হয় রংপুর। দলের হয়ে ৩৪ বলে ২টি করে চার-ছক্কায় ৩৮ রান করেন শেখ মেহেদি। পারভেজ হোসেন ইমনের ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ২৫ রান। অধিনায়ক নূরুল হাসান সোহান এদিন রংপুরের হয়ে মাঠে নামতে পারেননি ইনজুরির কারণে। তার বদলে দলকে নেতৃত্ব দেন পাকিস্তানের শোয়েব মালিক। এই জয়ে খুলনা টাইগার্স ২ পয়েন্ট নিয়ে উঠে এসেছে তালিকার ৫ম স্থানে। এ ছাড়াও ৫ ম্যাচে টানা জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে মাশরাফি বিন মুর্তজার সিলেট স্ট্রাইকার্স। ৬ পয়েন্ট নিয়ে সাকিব আল হাসানের ফরচুন বরিশাল আছে দ্বিতীয় স্থানে। গতকাল হারলেও ৪ ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রংপুর রাইডার্স। অন্যদিকে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ৫ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে চতুর্থ স্থানে। চট্টগ্রাম পর্বের শেষ ম্যাচে দলটি ফের মুখোমুখি হবে খুলনার। চট্টগ্রাম এসে তামিম ইকবালের ঘরের মাঠে হারতে হয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের কাছে। জয়ে ফিরতে তাই তারা ছিল ভীষণ মরিয়া। তবে গতকাল শুরুটা করেছিলেন মুনিম শাহরিয়ার। তামিম ইকবালকে অপরপ্রান্তে রেখে ব্যাট চালাতে থাকেন তিনি। যদিও আউট হওয়ার আগে বল আর রান সমান সমান হয়ে যায়, ২১ বলে ২১ রানে আউট হন মুনিম শাহরিয়ার। মুনিমের বিদায়ে ভাঙে ৪১ রানের উদ্বোধনী জুটি। তবে তাতে খুব একটা সমস্যা হয়নি, মাহমুদুল হাসান জয়কে সঙ্গে নিয়ে বাকি পথটা অনায়াসেই পাড়ি দেন তামিম। তাদের ৭৯ বলে হার না মানা ৮৯ রানের জুটিই জয়ের জন্য যথেষ্ট হয়ে যায়। এর আগে অবশ্য রংপুর রাইডার্সকে স্বল্প রানেই আটকে দেয় খুলনা টাইগার্স। ইনিংসের শেষ বলে অলআউট হওয়ার আগে খুলনার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে মাত্র ১২৯ রান করতে পারে রংপুর। রংপুরের একাদশে ছিলেন না নিয়মিত অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। জানা যায় চোটে পড়েছেন তিনি। ফলে তার বদলে রংপুরের হয়ে টস করতে আসেন পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক। যেখানে টসে হেরে ব্যাট করতে নামতে হয় তার দলকে। আগে ব্যাট করতে নেমে স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই রনি তালুকদারের উইকেট হারায় রংপুর, ০ রানে ফিরেছেন এই ব্যাটার। ওয়ানডাউনে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেননি নাইম শেখ, ফিরেন ১৩ রান করে। তবে এবারের বিপিএলে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান। দলের ১১.৪তম ওভারে দলীয় ৭৪ রানে চতুর্থ উইকেটটিও হারিয়ে ফেলে রংপুর, ১৪ বল থেকে মাত্র ৯ রান করে ফেরেন অধিনায়ক শোয়েব মালিক। তবে একপ্রান্ত আগলে ব্যাট করতে থাকেন শেখ মেহেদী। পারভেজ ইমনের সঙ্গে ২৯, শোয়েব মালিকের সঙ্গে ২৩ ও মোহাম্মদ নাওয়াজের সঙ্গে গড়েন ১৮ রানের জুটি। আউট হওয়ার আগে খেলেন ৩৪ বলে ৩৮ রানের ইনিংস। মাঝে শামিম পাটোয়ারী আউট হন ৯ বলে ৪ রান করে। দ্রুত উইকেট হারানোর সঙ্গে কমতে থাকে রানের গতিও। তবে ১৯তম ওভারে মোহাম্মদ সাইফুদ্দীনের ওভারে ১৭ রান আসলে বলের সঙ্গে রান এগিয়ে যায়। যেখানে বড় ভূমিকা রাকিবুল হাসানের, ৭ বলে ১২ রান করেন এই স্পিনার। তাছাড়া নাওয়াজ ১১ বলে ৫, ওমরজাই ৯ ও হাসান মাহমুদ করেন ১ রান। ০ রানে রান আউট হয়েছেন হারিস রউফ। বল হাতে খুলনার হয়ে উজ্জ্বল ছিলেন পেসাররা। ওয়াহাব রিয়াজ মাত্র ১৪ রানে ৪ উইকেট ও আহমাদ বাট ১৬ রানে শিকার করেন ৩ উইকেট। নাহিদুল ইসলামের ঝুলিতে যায় ২ উইকেট।