কেবলমাত্র আওয়ামী লীগই দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বরিশাল, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও গাজীপুরের সাম্প্রতিক সিটি নির্বাচন নিয়ে কেউ একটি প্রশ্নও তুলতে পারেনি। অতীতে বাংলাদেশে এত শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন হয়েছে কিনা প্রশ্ন করেন তিনি। প্রতিটি উপনির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে পারি কেবলমাত্র আওয়ামী লীগই এদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারে।
গত রাতে বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদের ২৩তম অধিবেশনের (২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশন) সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ৩১ মে শুরু হওয়া অধিবেশন ২২ কার্য দিবস শেষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী রাষ্ট্রপতির সমাপ্তির আদেশ পাঠ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অগ্নিসংযোগ, হত্যা ও অন্যান্য অপকর্ম চালিয়ে তারা (বিএনপি) দেশে গণতন্ত্র ধ্বংস করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে, জনগণের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে, দেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।
তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষ তাদের (আ’লীগ) নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকা’কে ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছে, আবার নৌকায় ভোট দেওয়ায় মঙ্গা (দুর্ভিক্ষ) দূর হয়েছে এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের জনগণ বারবার আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে, এর সুফল তারা পাচ্ছে। ‘আজ, আমরা দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশে নামিয়ে এনেছি’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বে কোভিড -১৯ মহামারী এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ না থাকলে এটি আরও কমানো যেত। তিনি আরও বলেন, মহামারী ও যুদ্ধের পরও সরকার জনগণকে খাদ্য, চিকিৎসাসহ অন্যান্য সেবা দিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সক্ষম হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় আমরা জনগণের জন্য কাজ করছি এবং জনগণের সেবা করা আমাদের দায়িত্ব।
আমরা এটা চালিয়ে যাব।’ ২০২১ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ইনশাআল্লাহ, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে একটি স্মার্ট দেশ- যেখানে থাকবে স্মার্ট মানুষ, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সমাজের পাশাপাশি স্মার্ট-দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণ হবে।
বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন তাদের দিকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের আগে নিজ দেশের মানুষের মানবাধিকার রক্ষা করা উচিত।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার নেই, তারা কেন ২০০১ সালে সংঘটিত দমন-পীড়ন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা এবং ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে কী ঘটেছিল তা দেখেননি।
তাঁর সরকার নির্যাতিত ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবিক কারণে তারা এত মানুষের দায়িত্ব নিয়েছেন। ‘এর চেয়ে মানবাধিকার রক্ষার বড় উদাহরণ আর কী হতে পারে? এটা আমার প্রশ্ন,’ বলেন তিনি।
তিনি প্রশ্ন করেন, আওয়য়ামী লীগ সরকার যখন অন্য দেশের নির্যাতিত মানুষকে আশ্রয় দেয় তখন তারা কেন মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে? ‘তারা এটা কিভাবে বলতে পারে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বহু মানুষ নিহত হয়েছেন। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও নিয়মিত বন্দুকের গুলিতে স্কুলে, শপিং মল এবং রাস্তায় (মানুষকে হত্যা করা হয়েছে) শিশুকে হত্যা করা হচ্ছে।
‘তাদের নিজেদের দেশের মানবাধিকার আগে রক্ষা করা উচিত।


