ডেঙ্গুতে চলতি বছরে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়েছে। একদিনে আরও ১ হাজার ৭৯৩ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮ জন মারা গেছেন। এ পর্যন্ত ৯৭৫ জনের প্রাণ গেছে ডেঙ্গুতে। চলতি মাসেই প্রাণ গেছে ৩৮২ জনের। গত মাসের তুলনায় মৃত্যুর হারও বেশি চলতি মাসে। সেপ্টেম্বরে গড়ে দিনে ১৩ জনের বেশি রোগী মারা গেছেন। আগস্টে গড়ে দৈনিক এই সংখ্যা ছিল ১১ জন করে। রাজধানীর চেয়ে দ্বিগুণের বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে গ্রামে। মৃত্যুও বেশি গ্রামে।
দেশে ইতিমধ্যে ডেঙ্গু রোগী মৃত্যু ও শনাক্তে পুরনো রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। চলতি বছরের এ পর্যন্ত ২ লাখ ৯৮১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানীতে ৮২ হাজার ৪৭১ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ লাখ ১৮ হাজার ৫১০ জন। মৃত ৯৭৫ জনের মধ্যে নারী ৫৪৮ জন এবং পুরুষ ৪২৭ জন। মোট মৃত্যুর মধ্যে ঢাকার বাইরে মারা গেছেন ৩৪৪ জন এবং রাজধানীতে ৬৩১ জন।
আজ সারা দেশের পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১ হাজার ৭৯৩ জনের মধ্যে ঢাকার বাসিন্দা ৫৮৪ জন এবং ঢাকার বাইরে ১ হাজার ২০৯ জন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন ১ হাজার ৭৯৩ জনসহ বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫২৬ জনে। ঢাকার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩ হাজার ২৮৩ জন এবং ঢাকার বাইরে ৬ হাজার ২৪৩ জন। চলতি বছরের এ পর্যন্ত ২ লাখ ৯৮১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ভর্তি রোগীর মধ্যে পুরুষ আক্রান্ত ১ লাখ ২২ হাজার ২৪৩ জন এবং নারী ৭৮ হাজার ৭৩৮ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ লাখ ৯০ হাজার ৪৮০ জন।
অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬৬ জন এবং মারা গেছেন ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে আক্রান্ত ১৬৬ জন এবং মারা গেছেন ৩ জন, মার্চে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১১১ জন এবং এপ্রিলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৪৩ জন এবং মারা গেছেন ২ জন। মে মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৩৬ জন এবং মারা গেছেন ২ জন। জুন মাসে ৫ হাজার ৯৫৬ জন এবং মারা গেছেন ৩৪ জন। জুলাইতে শনাক্ত ৪৩ হাজার ৮৫৪ জন এবং মারা গেছেন ২০৪ জন। আগস্টে ৭১ হাজার ৯৭৬ জন শনাক্ত এবং প্রাণহানি ৩৪২ জন। সেপ্টেম্বরের ২৯ দিনে শনাক্ত রোগী ৭৭ হাজার ১৭৩ জন এবং মারা গেছেন ৩৮২ জন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা আরও বেশি হবে। কারণ অনেক ডেঙ্গু রোগী বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন, তাদের হিসাব স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের খাতায় নেই।