ঘূর্ণিঝড় ‘মিধিলি’র কারণে চরম উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে দিন কেটেছে ভোলার ২০ লাখ মানুষের। এর মধ্যে চরাঞ্চলের শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ রয়েছে এক জেলে। দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দ্বীপ জেলাটি। বিদ্যুৎ আর নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন জেলাবাসী।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সকাল থেকেই ভারি বৃষ্টি আর দমকা হাওয়া বইতে থাকে ভোলায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে জেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। মনপুরা, তজমুদ্দিন ও সদরের ইলিশার মেঘনা নদীতে ১১ জেলেসহ তিনটি মাছধরার ট্রলার ডুবে গেছে।
ডুবে যাওয়া একটি ট্রলারের ১০ মাঝি মাল্লা উদ্ধার হলেও তজুমদ্দিনের মলংচড়ার বাসু মাঝি নামে এক জেলে নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে। বাসু মাঝির সঙ্গে থাকা তিন জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মনপুরার আলমপুর ঘাটে নোঙর করে রাখা কবির মাঝির ট্রলারটি ঢেউয়ের আঘাতে ভেসে যায়। ওই ট্রলারটি উদ্ধারে জন্য আরেকটি ট্রলার নিয়ে লতিফ, মিরাজ ও রাজিব নদীতে যায়। এসময় ঝড়ের কবলে পড়ে দুটি ট্রলার ডুবে যায়। প্রায় একঘণ্টা নদীতে ভাসমান থাকার পর অন্যদের সহায়তায় মিরাজ, লতিফ ও রাজিব জীবিত উদ্ধার হন।
এছাড়াও ঘাটে বাঁধা অবস্থায় ঢেউয়ের আঘাতে জেলার ২৩টি ট্রলার ভেঙে গেছে। ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটে চলাচলকারী ফেরি কুসুম কলি জোরখাল এলাকায় নোঙর করা অবস্থায় ঢেউয়ের পানি ইঞ্জিন রুমে ঢুকে পড়ে। পরে কোস্টগার্ড-ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় ফেরিটি নিরাপদে আনার কথা জানিয়েছেন ফেরির ম্যানেজার পারভেজ খান।
অন্যদিকে একটানা বৃষ্টি ও বাতাস থাকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। ঝড়ের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব লঞ্চ, ভোলা-লক্ষ্মীপুর ও ভোলা- বরিশাল রুটের ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে দেশের মূল ভুখন্ড থেকে বিছিন্ন হয়ে পড়ে দ্বীপ জেলা ভোলা। সকাল থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় নেটওয়ার্ক বিপর্যয়সহ চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে জেলা বাসীকে। সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত জেলার কোথাও বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়নি।
নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করায় সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত ভোলা থেকে রাজধানী ঢাকা বা বরিশালের সঙ্গে যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়নি। ঝড় থেমে যাওয়ার পর স্থানীয় প্রশাসন ক্ষয়-ক্ষতি ও উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে বলে জানান ভোলার জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান।