চট্টগ্রাম নগরীর কালামিয়া বাজারের হাজী নজির আহম্মেদ মার্কেটের মসলার মিলে পা রাখতেই ওপরের দেয়ালে সাঁটানো ব্যানারে আটকে যায় চোখ। সেখানে বড় হরফে লেখা-‘৯৯% খাঁটি মসলা, স্বাদে অতুলনীয়!’ কিন্তু সেই ‘খাঁটি মসলার’ দোকানে ঢুকেই আঁতকে ওঠলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। সেখানে পচা মরিচ শুকিয়ে গুঁড়া করা হচ্ছিল। শুধু তাই নয়, যে ইঞ্জিনে মসলা গুঁড়া করা হচ্ছিল সেখানেই আবার বানানো হচ্ছিল দাঁতের মাজন।
আজ মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর কালামিয়া বাজারের হাজী নজির আহম্মেদ মার্কেটের একটি মিলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় এবং জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে এই চিত্র দেখতে পান।
অভিযানে ছিলেন অধিদফতরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (মেট্রো) মো. আনিছুর রহমান, সহকারী পরিচালক রানা দেব নাথ এবং চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাসরিন আকতার। তাদের সহযোগিতা করেন ছাত্র-জনতা ও পুলিশ।
অধিদফতরের বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (মেট্রো) মো. আনিছুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, এই মিলে ব্যবহার অনুপযোগী, একেবারে নষ্ট, ধুলাবালি ও ময়লা আবর্জনাযুক্ত মরিচ গুড়া করা হচ্ছিল। আমাদের ধারণা ভালো মরিচের গুঁড়ার সঙ্গে এগুলো মিশিয়ে বিক্রি করা হচ্ছিল। তবে দোকানি আমাদের কাছে বলেছেন এই মরিচের গুঁড়া আচারে ব্যবহার করার জন্য বিক্রি করেন। কিন্তু আচারে হোক কিংবা অন্য কোনো খাবারেই যাক-এই মরিচের গুঁড়া খাওয়ার জন্য একেবারেই অনুপযোগী। আর এই মিলে একইসঙ্গে দাঁতের মাজনের গুঁড়াও করা হচ্ছিল। এই মাজনে অনেক কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয়। কোনোভাবেই যে মিলে দাঁতের মাজন গুঁড়া করা হবে সেখানে মসলা গুঁড়া করা যাবে না। এসব অভিযোগে এই মিলের দোকানিকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করে সতর্ক করা হয়েছে। ভবিষ্যতেও দোকানটিতে তদারকি করা হবে।
তবে মিলের মালিকের দাবি মসলাগুলো তার না, তিনি শুধু গুঁড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, এগুলো বিভিন্ন জনের। তারা আমার কাছে নিয়ে আসেন, আমি শুধু গুঁড়িয়ে দিই। আর এই মরিচগুলো আচারের কাজে ব্যবহার করেন তারা।
অবশ্য মসলাগুলো যে খাওয়ার অনুপযোগী সেটি স্বীকার করেছেন মিলের মালিক।