সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁও : কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী ঈদগাঁহ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের তথ্যপ্রমাণ সরাতে গেল মধ্যরাতে স্কুলের অফিসকক্ষে দুর্ধর্ষ হামলা চালিয়েছে একদল সংঘবদ্ধ দুর্বৃত্ত।
প্রথমে সিনেমা স্টাইলে তারা অফিস কক্ষের দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে সংরক্ষিত নথিপত্রের আলমারী ভেঙ্গে সরানোর নাটক মঞ্চস্থ করে। নাটকের প্রথম দৃশ্যটা ছিল খাতা, কাগজপত্র এলোমেলোভাবে ফ্লোরে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে দেয়া যেন দর্শক বুঝতে পারে যে,এখানে স্কুলের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও নথি খোঁজা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বা নথিগুলি গায়েব করা হয়েছে।
এর আগে সরিয়ে ফেলে স্কুলের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি)।
এরপর তাণ্ডব চালিয়ে সরিয়ে নিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র।
এই নেক্কারজনক ঘটনাটি কে বা কারা ঘটিয়েছে? কার স্বার্থে ঘটানো হয়েছে? কি উদ্দেশ্যে ঘটানো হয়েছে? এবং এই ঘটনা থেকে কে বা কারা লাভবান হচ্ছে? এমন শত প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সাধারণ অভিভাবক ও সাধারণ মানুষের মনে এবং জনমনে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
অনেকেই বলছেন, অপসারিত প্রধান শিক্ষক নিজেকে বাঁচাতে তার অনুগতদের মাধ্যমে ওই ঘটনা ঘটিয়েছে, যেন তার বিরুদ্ধে চলমান তদন্তকার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয় এবং তার লাগামহীন দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থলোপাটের ঘটনা ধামাচাপা দেয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্কুলের কর্মরত একজন শিক্ষক জানান, এ ঘটনায় কে বা কারা জড়িত কিংবা এর উদ্দেশ্য কি সেটা যেমন আমাদের কাছে দিবালোকের মত পরিষ্কার, তেমনি অন্য কারো কাছেও অজানা নয়।
তিনি সংঘটিত ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, প্রধান শিক্ষকের ইন্ধনে তারই আত্মস্বীকৃত
দুষ্কর্মের সহযোগিরা যে এই ঘটনা ঘটিয়েছে এতে কোন সন্দেহ নেই।
বিশ্বস্তসূত্র থেকে জানা গেছে, বিতর্কিত প্রধান শিক্ষকের ছত্রছায়ায় আশ্রিত কতিপয় সুবিধাভোগী আলাদীনের চেরাগের মালিক হয়েছে। অল্প সময়ের ব্যবধানে অর্জন করেছে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বিপুল অর্থবিত্ত। গড়ে তুলেছেন বিলাসবহুল সুরম্য অট্টালিকা। বেশভূষণ ও দৈনন্দিন জীবনযাপনে এসেছে আমূল পরিবর্তন।
প্রধান শিক্ষককে ছলেবলে কৌশলে কলঙ্কমুক্ত করে স্বপদে বহাল তবিয়তে রাখতে পারলেই তাদের রুটিরুজি, হালুয়া-মধুর ভান্ডার সুরক্ষিত হবে।
গতরাতে ঘটনাটি সাজানো নাটক হিসেবে উল্লেখ করে কজন অভিভাবকের অভিযোগ , প্রধান শিক্ষক
কর্মবিরতিতে যাওয়ার আগের দিন স্কুলত্যাগ করার সময় প্রয়োজনীয় নথিপত্র সাথে করে নিয়ে যান। সেই ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার ঘৃণ্য মানসে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ওই ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। প্রধান শিক্ষক স্কুলের নথিপত্র সরানোর দায় থেকে মুক্ত হতে দৃর্বৃত্তায়নের নাটক মঞ্চস্থ করেছেন।
সাধারণ মানুষকে বোকা বানানোর বালখিল্যতা সবাই বুঝে এবং জানে।
দাবি উঠেছে বিতর্কিত ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের অর্থলোপাট ও দুর্নীতির সহযোগিদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করতে পারলেই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।