বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, গত ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী শাসনের সবচেয়ে বড় উদাহরণ। সারা দেশে আইনের শাসন ছিল না বলেই কিন্তু প্রধান বিচারপতি হয়েও এসকে সিনহাকে অবিচারের শিকার হতে হয়েছিল। পলাতক স্বৈরাচারের আমলে আদালত আর আয়নাঘর একাকার হয়ে গিয়েছিল। সুতরাং সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু দলমত ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেকটা নাগরিকের অধিকার এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে রাষ্ট্র ও সমাজে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কোনও বিকল্প নেই।
আজ শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্মানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক শুভেচ্ছা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, এই বাংলাদেশ আপনার-আমার, আমাদের সবার। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক সব ক্ষেত্রে সমান অধিকার ভোগ করবে এটাই বিএনপির নীতি, এটাই বিএনপির রাজনীতি। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের দল বিএনপি বিশ্বাস করে, দলমত ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার।
সবাইকে দুর্গাপূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামী মাসেই আপনাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। এই উৎসর উপলক্ষে আমি আপনাদের আগাম শুভেচ্ছা জানাই। আপনারা প্রত্যেকে উৎসব উদযাপন করুন নির্ভয়ে, নিশ্চিন্তে, নিরাপদে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র ছিলে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বাসী বলুন আর অবিশ্বাসী বলুন কিংবা সংশয়বাদী, প্রত্যেকটি নাগরিক রাষ্ট্র বা সমাজে যার যার ধর্মীয় রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক অধিকারগুলো স্বাচ্ছন্দ্যে বিনা বাধায় উপভোগ করবে এমন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ও সমাজ নির্মাণের জন্যই মুক্তিযোদ্ধারা লাখো প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন।
তারেক রহমান বলেন, আমি মনে করি নিজ নিজ অধিকার রক্ষায় প্রত্যেকটি নাগরিকের ভোটের অধিকার একটি কার্যকরী শক্তিশালী অস্ত্র। যতদিন পর্যন্ত মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃষ্টান অর্থাৎ দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের প্রত্যেকটি নাগরিক নির্ভয়ে নিশ্চিন্তে নিজের ভোট দিয়ে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে না পারবেন, ততদিন পর্যন্ত কোনও নাগরিকের নিরাপত্তা ও অধিকার সুরক্ষিত নয়।’
ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আমরা যুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছি, পাশাপাশি হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খৃষ্টান দাঁড়িয়ে। এখন আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতার কথা বলছি। সেটা আমাদের রক্ষা করতে হবে। এখানে যারা চক্রান্ত করছে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের পরাজিত করতে হবে। কে মুসলমান, কে হিন্দু, কে বৌদ্ধ, কে খৃষ্টান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে আমাদের এমন কোনও জিজ্ঞাসা কিন্তু ছিল না। আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু এসব নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি-অবাঙালি, বিশ্বাসী অবিশ্বাসী কিংবা সংস্কারবাদী প্রতিটি নাগরিকের একমাত্র পরিচয় আমরা বাংলাদেশি।
