এস. এম. রুবেল, মহেশখালী: কক্সবাজারের মহেশখালীতে তিন ভাইকে অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। ওই তিন ভাই হলেন, উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের উত্তর ঝাপুয়া গ্রামের মৃত মোসলেম মিয়ার পুত্র মুহাম্মদ আজগর, মুহাম্মদ রিদোয়ান ও রাকিবুল হাসান রুবেল। তারা তিন জনই ঝাপুয়া বাজারের প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী এবং সেখানে তাদের নিজস্ব মার্কেট রয়েছে।
বৃহষ্পতিবার (১০ অক্টোবর) বিকাল ৪টায় উপজেলার কালারমারছড়ার উত্তর ঝাপুয়া বাজারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে কোস্ট গার্ড কর্তৃক আটককৃত তিন ভাইকে দ্রুত মুক্তি দিয়ে প্রকৃত সন্ত্রাসীদের আটক করার দাবী জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বুধবার (৯ অক্টোবর) রাত ২টার দিকে কোস্টগার্ডের একটি টীম অভিযান চালিয়ে বসতঘর থেকে ব্যবসায়ী মুহাম্মদ আজগর, মুহাম্মদ রিদোয়ান ও রুবেলকে আটক করে। ওই সময় বাড়িতে তল্লাশী করে কোন ধরণের বেআইনী জিনিসপত্র পায়নি। পরে তাদের নিয়ে বসতঘর থেকে দুরে অবস্থিত পুকুর পাড়ে অভিযান চালানোর নাম করে অস্ত্র ও গুলি দেয়া হয় এবং তারা ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিলো উল্লেখ করে মামলা দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করে দেয়।
মুহাম্মদ রিদোয়ানের স্ত্রী জোসনা আকতার জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে রাতের বেলা দরজা খুলতে বলে। দরজা খুলে দিলে তার স্বামীকে আটক করে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে আনে। একই সময় তার স্বামীর অপর দুই ভাই আজগর ও রুবেলকেও আটক করে। এসময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছে বলে উল্লেখ করে। এই ঘটনা মিথ্যা ও সম্পূর্ণ সাজানো দাবী করে তিনি আরো বলেন, তার স্বামী দোকান বন্ধ করে বাড়িতে এসে ঘুমিয়েছে। মূলত প্রতিপক্ষের লোকজন অস্ত্র রেখে তার স্বামী ও ভাইদের কোস্ট গার্ডের হাতে ধরিয়ে দেন।
মুহাম্মদ আজগরের ভাই আবু আহমদ চৌধুরী বলেন, তার পরিবার বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত ছিল। আওয়ামীলীগ আমলে তাদের উপর নানান নির্যাতন চালানো হত। দেয়া হতো মিথ্যা মামলাও। এরই জের ধরে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা কাদের মেম্বার ও আনছারের নেতৃত্বে তাদের পুকুর পাড়ে অস্ত্র গুলো রেখেছিল। পরে তারা কোস্ট গার্ডের সাথে সমন্বয় করে তার তিন ভাইকে আটক করায় এবং ডাকাতির প্রস্তুতি নেয়ার সময় অভিযান চালিয়ে আটক করেছে বলে প্রচার করান। প্রকৃত অর্থে তার ভাইয়েরা ব্যবসায়ী। এসময় তিনি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করেন।
এসময় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ হওয়া তানভীরের বড় ভাই মিজানুর রহমান মাতব্বর, কালারমারছড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দীন চৌধুরী, ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক নাজমুল হোছাইন সিদ্দিকী, আজিজুল হক, জেলা কৃষকদল নেতা ফরিদুল আলম, বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম মনি, ব্যবসায়ী আজিজুল হক টুলু, ব্যবসায়ী লোকমানসহ প্রমুখ।
এদিকে তিন ভাইকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আটক করেছে, এমন খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের মাঝে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয় এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান ধরণের মন্তব্য করা হয়।