বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে ডাকাতদের হামলা ও লুটপাটের শিকার হয়েছিল কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া ফিশারী ঘাট থেকে রওনা হওয়া ১৬ জেলের একটি ট্রলার। পরে জেলেদের মারধর করে ডেকের ভিতর বন্দি রেখে ডাকাতরা ট্রলারটি ছেড়ে দিয়েছিল সীমান্তের মিয়ানমার অংশের একটি চরে।
আর ভুক্তভোগী জেলেরা সেখানকার স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করে আশ্রয় নিয়েছিল। এরপর ছয়দিন আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকার পর বিষয়টি রোববার (১৩ অক্টোবর) বিজিবিকে অবহিত করে। এর প্রেক্ষিতে সোমবার সন্ধ্যায় নাফ নদীর শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত দিয়ে বিজিবির সংশ্লিষ্টরা আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করে ১৬ জেলেকে ফেরত আনে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়ন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ব্যাটালিয়নটির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ।
ফেরত আসা জেলেরা হলেন: কক্সবাজারের রামু উপজেলার থোয়াইঙ্গাকাটা গ্রামের মৃত হোসেন আহমেদের ছেলে মো. ইসমাইল (২৭), কক্সবাজার সদরের মৃত কেফায়েত উল্লাহর ছেলে আব্দুল হাফেজ (২৮), মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে আজিজুর রহমান (৪৫), মৃত অলি আহমদের ছেলে আবু হেনা (৪০), মৃত ঠাণ্ডু মিয়ার ছেলে আলী (৪০), মোস্তাকের ছেলে আরাফাত (৩০). তোফাজ্জলের ছেলে মো. হেলাল (২৮), মৃত নূর মোহাম্মদের ছেলে আমান উল্লাহ (৫০), মো. ওয়ারেজের ছেলে নবী হোসেন (২৮), মৃত মুকবুল আহমেদের ছেলে মো. সলিমুল্লাহ (৪৫), মৃত আমির হোসেনের ছেলে মো. ইউনুস (৫২), মোহাম্মদের ছেলে মো. সাগর (২২), আলী আকবরের ছেলে মো. সেলিম (২৮), মোস্তাক আহমদের ছেলে দিল মোহাম্মদ (২৭) এবং মৃত মুরুরুল হোসেনের ছেলে রহিম উল্লাহ (৫২) ও মো. জয়নাল (৫৫)।
সংবাদ সম্মেলনে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দীন বলেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বর সকালে কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া ফিশারি ঘাট থেকে ১৬ জন জেলে একটি ট্রলারযোগে গভীর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যায়। গত ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় ৩টি ট্রলারে করে অজ্ঞাত ডাকাতদল ওই জেলেদের ওপর আক্রমণ করে মারধর করে ট্রলারটির ডেকের ভিতরে বন্দি করে রাখে। পরে গত ৭ অক্টোবর ভোরে ডাকাতরা জেলেদেরকে বঙ্গোপসাগরের মিয়ানমার অংশের একটি চরে ছেড়ে দেয়।
পরবর্তীতে জেলেরা দেশটির স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তাদের কাছে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে। ওই জেলেরা প্রায় ৬ দিন আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকার পর গত ১৩ অক্টোবর তাদের আটকের বিষয়টি বিজিবিকে অবহিত করে।
বিজিবির এ কর্মকর্তা বলেন, ‘এর প্রেক্ষিতে বিজিবির টেকনাফ ব্যাটালিয়নের একটি প্রতিনিধি দল আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে সোমবার সন্ধ্যায় টেকনাফের নাফ নদীর শাহপরীরদ্বীপ জেটিঘাট দিয়ে ১৬ জন জেলেকে বাংলাদেশে ফেরত এনেছে।’
মঙ্গলবার দুপুরে বিজিবির সংশ্লিষ্টরা স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফেরত আসা জেলেদের হস্তান্তর করেছে বলেও জানান লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ।