চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন সামনে রেখে সংগ্রহ করা ২১ জনের মনোনয়ন ফরম যাচাই শেষে বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এরা সকলেই বিএনপি-জামায়াতপন্থী আইনজীবী ঐক্য পরিষদের প্রার্থী।
১৬ এপ্রিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় শনিবার (১২ এপ্রিল) তাদের বিজয়ী ঘোষণা করা হচ্ছে। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সবগুলো পদে একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেন।
জানা গেছে, ২১টি পদের মধ্যে ১৪টি পদে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা হলেন- সভাপতি আবদুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী চৌধুরী, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি কাজী মো. সিরু, অর্থ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, পাঠাগার সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশরাফী বিনতে মোতালেব, ক্রীড়া সম্পাদক মঞ্জুর হোসেন এবং সদস্য আহসান উল্লাহ, আসমা খানম, বিবি ফাতেমা, মেজবাহ উল আলম, রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী, রাহিলা গুলশান ও সাজ্জাদ কামরুল হোসেন।
৭টি পদে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা হলেন- সহসভাপতি আলমগীর মোহাম্মদ ইউনুস, সহ-সম্পাদক ফজলুল বারী, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুল জব্বার এবং সদস্য শাহেদ হোসেন, হেলাল উদ্দিন, রোবায়তুল করিম ও মোহাম্মদ মোরশেদ।
নির্বাচন কমিশন জানায়, তফসিল অনুযায়ী শুক্রবার মনোনয়ন ফরম দাখিল, যাচাই ও বৈধ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশের জন্য দিন ধার্য ছিল। সেই অনুযায়ী যাচাই শেষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহকারী ২১ জনকে বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শনিবার চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে।
সভাপতি আবদুস সাত্তার বলেন, আইনজীবীদের কল্যাণ ও বারের দুর্নীতি রোধে কাজ করে যাব। রাজনীতি বারে আনব না।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবী ও সভাপতি পদে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ বলেন, আইনজীবী সমিতির ৯৮ শতাংশ সদস্যই ভোট দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভোটের ওপর আস্থা না থাকা কয়েকজন সমিতির সোনালি ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হতে তারা এমনটি করেছে। আওয়ামী লীগপন্থি ও এলডিপিপন্থি আইনজীবীকে তারা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে দেয়নি। আমরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কোনো সুরাহা মেলেনি।
মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা তারিক আহমেদ বলেন, প্রত্যেক পদের বিপরীতে একজন করে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন। যাচাই-বাছাই করে এগুলো সঠিক পাওয়া গেছে। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
জানা গেছে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই ৪ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন পরিচালনায় গঠন করা কমিটির মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলায়মানসহ পাঁচ কর্মকর্তা একযোগে পদত্যাগ করেন। নির্বাচন নিয়ে বিএনপি-জামায়াত ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীদের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করেই এ ঘটনা ঘটে।
১৬ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতিতে পাঁচ সদস্যের অ্যাডহক কমিটি গঠিত হয়। দুই মাসের মধ্যে তারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়। গত মঙ্গলবার জেলা আইনজীবী সমিতির তফসিল ঘোষণা করা হয়।