নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট থানার পোর্ট লিংক রোড মেরিন ড্রাইভ এলাকায় অবস্থিত ডিসি পার্কের নিরাপত্তা প্রহরী জাহাঙ্গীর আলম। দীর্ঘদিন ধরে স্বল্প বেতনে দায়িত্ব পালন করেও পরিবারের নিত্যপ্রয়োজন মেটাতেই হিমশিম খেতে হয় তাকে। আরও দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে তার বৃদ্ধ শাশুড়ি মরিয়ম বেগম—যাকে নিজের সন্তানের মতো দেখাশোনা করেন জাহাঙ্গীর, কারণ তার কোনো ছেলে সন্তান নেই।
গত ১৬ আগস্ট জাহাঙ্গীরের ছেলে তানজিদ আলমকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন জাহাঙ্গীর। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাসায় ফিরলেও চলমান চিকিৎসা ও আনুষঙ্গিক ব্যয় জোগানো তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না। অসহায় এই পরিস্থিতিতে তিনি লিখিতভাবে সহায়তা চান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে।
সারাদেশে ‘মানবিক ডিসি’ হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর) জাহাঙ্গীরকে অফিসে ডেকে মরিয়ম বেগমের চিকিৎসার জন্য নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর বলেন, “ছোটবেলা থেকেই চট্টগ্রামে থাকি, অনেক ডিসিকেই দেখেছি। এই ডিসি স্যার গরিব মানুষকে নিজের লোক মনে করে সাহায্য করেন।”
জাহাঙ্গীরকে বিদায় দিয়ে নির্ধারিত সভায় যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন জেলা প্রশাসক। ঠিক সেই সময় উপস্থিত হন আরেক অসহায় নারী—গীতা বিশ্বাস (৫০)। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতা ও দারিদ্র্যের কষ্টে জর্জরিত এই নারী ডিসির কাছে চিকিৎসা সহায়তা চান। তাকেও তাৎক্ষণিক আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন ডিসি জাহিদুল ইসলাম। সহায়তা পেয়ে আবেগাপ্লুত গীতা বিশ্বাস জেলা প্রশাসককে আশীর্বাদ করতে করতে বেরিয়ে যান।
জেলা প্রশাসকের নির্দেশে স্টাফরা তাকে আপ্যায়নও করেন।

মানবিক সহায়তার বিষয়ে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম বলেন, “এই জেলার দায়িত্ব নতুন নিয়েছি। সামনে জাতীয় নির্বাচন—ব্যস্ততাও অনেক। তারপরও চেষ্টা করি যেন কেউ সাহায্য চাইতে এসে খালি হাতে না ফেরেন। মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাড়াতে পারাই আমার বড় প্রাপ্তি।”
মানবিক উদ্যোগে ব্যস্ত সময়েও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে আবারও প্রশংসা কুড়ালেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা।


