সমাবেশ ও দুই বিভাগে রোডমার্চ ঘোষণা
সরকার পতনের একদফা দাবিতে আগামীকাল শুক্রবার রাজধানীতে সমাবেশ করবে বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। একই দাবিতে শনিবার ও রোববার উত্তরাঞ্চলের দুই বিভাগে তারুণ্যের রোডমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি’র তিন অঙ্গ সংগঠন। এদিকে সেপ্টেম্বরেই ঢাকাসহ ১৯ জেলায় রোডমার্চ বা সমাবেশ করার চিন্তা করছে বিএনপি ও সমমনা জোটগুলো। মঙ্গলবার রাতে স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠকে এ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। পরে গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা ও বিএনপি সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে।
দলীয় সূত্র জানিয়েছেন, ১৬ই সেপ্টেম্বর থেকে ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের পাঁচ বিভাগে তারুণ্যের রোডমার্চের কর্মসূচি চূড়ান্ত করেছিল বিএনপির হাইকমান্ড। কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যা রাতে হঠাৎ স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হওয়া এই বৈঠক শেষ হয় রাত ৯টায়। এতে স্থায়ী কমিটির ছয়জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে নতুন কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অক্টোবরের শেষ ১০ দিনে যুগপৎভাবে কর্মসূচি দেয়ার চিন্তা করছে বিএনপি।
প্রাথমিকভাবে ঢাকাসহ আশপাশের ১৯ জেলায় রোডমার্চ কিংবা সমাবেশ করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সেজন্য পাঁচ বিভাগে কর্মসূচির পরিবর্তে শুধু উত্তরাঞ্চলের দুই বিভাগে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটির তিন অঙ্গসংগঠন। আগামী ১৬ই সেপ্টেম্বর রংপুর থেকে সৈয়দপুর দশমাইল হয়ে দিনাজপুর, ১৭ই সেপ্টেম্বর বগুড়া থেকে সান্তাহার-নওগাঁ হয়ে রাজশাহী পর্যন্ত রোডমার্চ অনুষ্ঠিত হবে।
কিন্তু ২১শে সেপ্টেম্বর ভৈরব থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া- হবিগঞ্জ- মৌলভীবাজার হয়ে সিলেট, ২৬শে সেপ্টেম্বর ঝিনাইদহ থেকে যশোর-নোয়াপাড়া হয়ে খুলনা এবং ৩০শে সেপ্টেম্বর কুমিল্লা থেকে ফেনী-মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত তারুণ্যের রোডমার্চ করার কর্মসূচি চূড়ান্ত ছিল। তিন বিভাগের কর্মসূচিগুলো ঘোষণা করা হয়নি। এমনও হতে পারে- ওইসব বিভাগে যুগপৎভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে। বাকি তিন বিভাগে রোডমার্চ কর্মসূচি কেন একসঙ্গে ঘোষণা করা হয়নি এমন প্রশ্নের জবাবে যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, বিএনপির হাইকমান্ড থেকে যেভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে আমরা সেভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। হয়তো বিএনপি ও যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা দলগুলো এর মধ্যে কর্মসূচি দিতে পারে। সেজন্য একসঙ্গে আমরা কর্মসূচি ঘোষণা করিনি। তবে পরবর্তীতে আলোচনা করে আমাদের বাকি তিন বিভাগের রোডমার্চ কর্মসূচি ঘোষণা করবো।
দুই বিভাগে রোডমার্চ করবে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল
এদিকে সরকার পতনের একদফা দাবিতে দেশের উত্তরাঞ্চলের দুই বিভাগে ‘তারুণ্যের রোডমার্চ’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। আগামী ১৬ই সেপ্টেম্বর রংপুর থেকে সৈয়দপুর দশমাইল হয়ে দিনাজপুর, ১৭ই সেপ্টেম্বর বগুড়া থেকে সান্তাহার-নওগাঁ হয়ে রাজশাহী পর্যন্ত রোডমার্চ করবে তারা। এসব কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু।
তিনি বলেন, নিশিরাতের ভোটের মাধ্যমে বর্তমান অবৈধ সরকারের পতনের এক দফা দাবিতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে রাজপথে আন্দোলন করছি। গত ১৫ বছরে চার কোটিরও বেশি তরুণ নির্বাচনে ভোট দিনে পারে নাই। এসব তরুণকে আমাদের আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে তারুণ্যের সমাবেশ করেছিলাম। এবার উত্তরাঞ্চলের দুই বিভাগে রোডমার্চ করবো। আগামী শনিবার রংপুর থেকে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে রোডমার্চ কর্মসূচি শুরু হবে। মাঝপথে কয়েকটি পথসভা হবে এবং দিনাজপুরে সমাবেশের মাধ্যমে প্রথম দিনের কর্মসূচি শেষ হবে। একইভাবে দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি বগুড়া থেকে শুরু হয়ে রাজশাহীতে গিয়ে শেষ হবে। তিনি আরও জানান, পরবর্তী ধাপের কর্মসূচি পরে ঘোষণা করা হবে। ধারাবাহিক কর্মসূচির মাধ্যমে এই সরকারের পতন হবে ইনশাআল্লাহ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, যুবদলের যোগাযোগ বিষয়ক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন মামুন প্রমুখ।