ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগের (আইপিএল) এবারের আসরে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলবেন মোস্তাফিজুর রহমান। এবারের আইপিএল নিলামের শেষ পর্যায়ে ‘অ্যাকসিলারেটেড’ রাউন্ড থেকে মোস্তাফিজুর রহমানকে দলে নিয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস। তবে তাকে দলে নেওয়ার ভাবনা শেষ দিকে হুট করে আসেনি আইপিএলের সফলতম দলটির। বরং নিলামের আগেই তার দিকে চেন্নাইয়ের দৃষ্টি ছিল বলে জানালেন দলটির প্রধান নির্বাহী কাসি বিশ্বনাথান। মূল কারণ, চেন্নাইয়ের উইকেটে মোস্তাফিজের সম্ভাব্য কার্যকারিতা।
চেন্নাইয়ের ঘরের মাঠ চিপকের এমএ চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামের উইকেটে অনেক সময়ই বল গ্রিপ করে কিছুটা, বল পিচ করে থমকে আসে। মোস্তাফিজের শুরুর সময়ের সেই জাদুকরী পারফরম্যান্স নেই অনেক দিন ধরেই। তবে এই ধরনের উইকেটে এখনও তিনি কার্যকর হতে পারেন তার স্লোয়ার ও কাটারের বৈচিত্র দিয়ে। এই মাঠের দুই পাশের সীমানাও বেশ বড়, যা এ বাঁহাতি পেসারের বোলিংয়ের জন্য সহায়ক হতে পারে।
ভিত্তিমূল্য ২ কোটি রুপিতে মোস্তাফিজকে পেয়েছে চেন্নাই। এছাড়াও এবার তারা ১৪ কোটি রুপিতে নিয়েছে নিউজিল্যান্ডের ড্যারিল মিচেলকে, ১ কোটি ৮০ লাখ রুপিতে রাচিন রবীন্দ্রকে ও ৪ কোটি রুপিতে শার্দুল ঠাকুরকে।
নিলামে চমক দেখিয়ে তারা ৮ কোটি ৪০ লাখ রুপিতে নিয়েছে তরুণ ব্যাটসম্যান সামির রিজভিকে। ২০ লাখ রুপিতে নিয়েছে ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কিপার-ব্যাটসম্যান আরাভেলি আভানিশকে।
চেন্নাইয়ে শনিবার ‘জুনিয়র সুপার কিংস’-এর উদ্বোধনী আয়োজনে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কাসি বিশ্বনাথান জানান, কাঙ্ক্ষিত ক্রিকেটারদেরকেই দলে নিতে পেরেছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। সেখানেই জানান মোস্তাফিজের কথাও। তিনি বলেন, ‘যাদেরকে নেওয়ার লক্ষ্য ছিল আমাদের, মোটামুটি তাদের সবাইকেই পেয়েছি। ড্যারিল মিচেলকে নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা ছিল। আমাদের মনে হয়েছে, চিপকের উইকেটে এবং সেখানে দুই পাশের সীমানা যেমন, মোস্তাফিজুর রহমান ভালো একটি পছন্দ হতে পারে। আমাদের ভাবনায় ছিল এসব। তবে আমরা নিশ্চিত ছিলাম না, তাদেরকে আমরা পাবো কি না। সৌভাগ্যবশত, এবার নিলাম বেশ ভালো কেটেছে আমাদের।’
আইপিএলে মোস্তাফিজ ৬ মৌসুম খেললেও এখনও পর্যন্ত এমএ চিদাম্বারাম স্টেডিয়ামে খেলা হয়নি তার। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে এই মাঠে খেলেছেন স্রেফ একবারই। এবারের বিশ্বকাপে সেই ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমানের পঞ্চম আইপিএল দল হতে যাচ্ছে চেন্নাই। ভারতের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি আসরে এর আগে তিনি খেলেছেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, রাজস্থান রয়্যালস ও দিল্লি ক্যাপিটালসে। আসরে ৪৮ ম্যাচ খেলে তার মোস্তাফিজের শিকার ৪৭ উইকেট। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৭.৯৩।
প্রথম আসরে ২০১৬ সালে ওভারপ্রতি স্রেফ ৬.৯০ রান দিয়ে ১৭ উইকেট নিয়ে হায়দরাবাদের শিরোপা জয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন তিনি। সেবার পেয়েছিলেন সেরা উদীয়মান ক্রিকেটারের পুরস্কারও। আইপিএলে এখনও পর্যন্ত এই পুরস্কার পাওয়া একমাত্র বিদেশি ক্রিকেটার তিনিই।
তবে শুরুর মৌসুমের কাছাকাছি পারফরম্যান্সও পরে আর কখনও দেখাতে পারেননি মোস্তাফিজ। অভিষেক মৌসুমের পর তার সেরা পারফরম্যান্স ২০২১ আসরে। রাজস্থানের হয়ে সেবার ১৪ ম্যাচে ১৪ উইকেট নেন ওভারপ্রতি ৮.৪১ রান দিয়ে।