চট্টগ্রাম মহানগর জামায়েত ইসলামীর আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী, জাতীয় সংসদে হিন্দুদের জন্য সংখ্যানুপাতিক আসন বরাদ্দ থাকা উচিত। জামায়েত ইসলাম ১৯৫৪ সালে নির্বাচন ও ১৯৭০ সালের নির্বাচনেও এই দাবি তুলেছি। যদি সংখ্যানুপাতিক আসন বরাদ্দ থাকে তবে হিন্দুরাই তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করে সংসদে পাঠাতে পারবে। জামায়েতের রাজনীতি মানুষের জন্য এবং মানবতার কল্যাণের জন্য।
আজ বুধবার (১১ সেপ্টম্বর) সকালে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুন্ডরীক ধামে রাধাষ্টমীর দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
শাহজাহান চৌধুরী বলেন, যদি সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভ করতে চান, তাহলে পাপকাজ যেগুলো রয়েছে সেগুলো যেমন মুসলিমদের জন্য পরিতাজ্য, ঠিক তেমনি হিন্দু বৌদ্ধদের জন্যও পরিতাজ্য। কোনো ধর্মই খারাপ কিছুকে স্বীকৃতি দেয়নি। মানবতার কথা বলেছে, মানুষের কথা বলেছে। আপনি সনাতনী, আমি মুসলিম। আমি আপনার কাছ থেকে দূরে থাকবো, এই শিক্ষা ইসলাম দেয়নি। ইসলাম অমুসলিমদের জন্য ভালোবাসা ও নিরাপত্তার কথা বলেছে। সুযলা সুফলা শষ্য শ্যামলা আমাদের এই বাংলাদেশ। অত্যন্ত সুন্দর একটি বাংলাদেশ। আমাদের মধ্যেতো কোনো বিভেদ ছিল না। কারা রাজনীতির জন্য হিন্দু মুসলিমদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করলো। দেশ আমাদের আপনার সবার। আমাদের আমীরে জামায়েত ডা.শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা নামায পড়তে যদি পাহারা দিতে না হয়, আমাদের মসজিদে যদি পাহারা দিতে না হয় তবে হিন্দু ভাইদের মন্দিরে কেন পাহারা দিতে হবে? আমরা এমন দেশ গড়তে চাই যেখানে সব ধর্মের মানুষ তাদের উৎসব অনুষ্ঠান করবে নির্বিঘ্নে।
তিনি বলেন, কোনো সংখ্যালঘু সংখ্যাগুরু হবে না। আমরা বাংলাদেশি, আমরা এক। আমাদের জন্মনিবন্ধন এক, জাতীয় পরিচয়পত্র এক, আমাদের সংস্কৃতি এক, আমাদের খাবার এক, আমাদের ব্যবহার এক। তাহলে বিভেদ কেন? আমরা সবাই বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। তাই শিক্ষার অধিকার, ধর্ম আচরণে অধিকার, খাবার অধিকার, বসবাসের অধিকার, কথা বলার অধিকার সবার সমান হতে হবে। কারো বেশি কারো কম হতে পারবে না। এইজন্য আমাদের সংবিধানে পরিবর্তন আনতে হবে। আমরা সবাই বাংলার সন্তান সেই হিসেবে সংবিধান রচিত হতে হবে।
সাংবাদিক বিপ্লব পার্থ এর সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী। আর্শীবাদক ছিলেন পাচুরিয়া তপোবন আশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ রবীশ^রানন্দ পুরী মহারাজ, বাঁশখালী ঋষিধামের মোহন্ত শ্রীমৎ শচ্চিতানন্দ পুরী মহারাজ, শ্রীমৎ অক্ষরানন্দ পুরী মহারাজ, নন্দনকানন ইসকন মন্দিরের সহ সভাপতি আকিঞ্চন গৌর দাস। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজীব ধর তমাল,চট্টগ্রাম মহানগর শিবিরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম বাবু, হাটহাজারী উপজেলা জামায়াতের আমীর প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম, হাটহাজারী পৌরসভা জামায়াতের আমীর মিজানুর রহমান,হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সংসদের সদস্য সচিব জুয়েল চক্রবর্তী, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ ক্রীস্টান ঐক্য পরিষদ হাটহাজারী শাখার সভাপতি গৌবিন্দ প্রসাদ মহাজন।
ছবির ক্যাপশন: হাটহাজারীর পুন্ডরীক ধামে রাধাষ্টমীর দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন চট্টগ্রাম মহানগর জামায়েতের আমীর মো.শাহজাহান চৌধুরী।