মোঃ নজরুল ইসলাম লাভলু, কাপ্তাই (রাঙামাটি): কাপ্তাই উপজেলা সদর বরইছড়িতে গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ৮টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এসময় আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে দোকানের সামনে থাকা একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় প্রায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধিত হয় বলে জানান ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারগণ।
প্রত্যক্ষদর্শী খাবারের দোকান লুমিনাস জোনের কারিগর রুহুল আমিন জানায়, বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দিবাগত রাত প্রায় ৩টা ২০ মিনিটের সময় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, আমি রাতে দোকানে ছিলাম। হঠাৎ কিছু বিকট শব্দ শুনতে পাই, দোকান খুলে দেখি আমাদের খাবারের দোকানের বিপরীত দিকের দোকানে আগুন লেগেছে। এসময় কেউ ছিল না, আমি দোকান থেকে বালতি নিয়ে পানি ছিটাই।
এদিকে, আগুন লাগার সংবাদ পাওয়ার পরপরই রাত প্রায় সাড়ে ৩ টার দিকে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন ও কাপ্তাই থানার ওসি মো. মাসুদের নেতৃত্বে থানায় অবস্থানরত সকল অফিসার, পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসে এবং কাপ্তাই ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। এরপরই ভোর সাড়ে ৪ টায় কাপ্তাই ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে ফায়ার সার্ভিসের ১টা ইউনিট, ২টি গাড়ি এবং ১৫ জন সদস্য নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ ও এলাকাবাসীর সহায়তায় ভোর প্রায় ৬ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে সক্ষম হয়। কিন্তু ৮ টি দোকানে থাকা সব মালামাল আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে ছাই হয়ে যায় এবং একটি দোকানের সামনে থাকা সিএনজি চালিত অটো রিকশাও ভস্মীভূত হয়।
কাপ্তাই ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহাদাত হোসেন বলেন, আমরা ভোর ৪টা ১০ মিনিটের দিকে আগুন লাগার সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে ভোর সাড়ে ৪ টায় ১টি ইউনিটের ২টি গাড়ী সহ ১৫ জন সদস্য গিয়ে প্রায় ৬ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। প্রাথমিক ভাবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগতে পারে বলে আমাদের ধারণা।
অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ দোকান গুলো হলো- মো. তাহেদুল ইসলামের শরীফ ফার্মেসী, সুলতান মাহমুদের গাড়ির ওয়ার্কশপ ও চাকার দোকান, আব্দুর রহিমের চা দোকান, মোস্তাফিজুর রহমান মুন্নার এম কে কে এন্টারপ্রাইজ (কম্পিউটার দোকান), মো. ইব্রাহিমের উর্মী টেইলার্স, আব্দুর রহমানের রহমান কম্পিউটার, সাদ্দাম হোসেনের সাদ্দাম স্টোর (মুদি দোকান) ও মো. রানার রানা ফার্নিচারের দোকান সম্পূর্ণরুপে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এছাড়া দোকানের সামনে পার্কিং করা অবস্থায় থাকায় রাইখালী নিবাসী অনুতোষ দে’র একটা সিএনজি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
ওইদিন ঘটনাস্থলে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদার রানা ফার্নিচারের মালিক মো. রানা বলেন, আমি অনেক কষ্ট করে দোকানটি শুরু করেছি, আমার প্রায় ৮ লাখ টাকার ফার্নিচার এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা পুড়ে গেছে। বৃহস্পতিবার সাড়ে ৩ লাখ টাকার ফার্নিচার ডেলিভারি দেওয়ার কথা ছিল।
ব্যবসায়ী সুলতান মাহমুদ বলেন, আমার টায়ার, মুবিল এবং পার্টস এর দোকানে থাকা সব কিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকার উপরে ক্ষতি হয়েছে আমার।
কম্পিউটার দোকান এম কে এন্টারপ্রাইজের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান মুন্না বলেন, আমার নতুন ফটোকপি মেশিন, ২টি কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মেশিনারি পার্টস সহ অনেক কিছু পুড়ে গেছে।
মুদির দোকান সাদ্দাম স্টোরের মালিক মো. সাদ্দাম ও চায়ের দোকানের মালিক আব্দুর রহিম বলেন, রাত ৩ টার পরে আগুন লেগে এখানে ৮টি দোকান এবং
১টি সিএনজি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সব কিছু মিলে আমাদের প্রায় ৪০ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।
সিএনজি চালক মামুন বলেন, দোকানের সামনে সিএনজি গাড়িটি রাতে সবসময় রাখি। এটি পুড়ে সব শেষ হয়ে গেছে।